কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সমাবেশে মারধরের শিকার গণঅধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি ফারুক হাসানের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবিতে আলটিমেটাম দিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের নেতারা। একই দাবিতে আধা ঘণ্টার মতো শাহবাগ থানার সামনে অবস্থান নেয় দলের নেতা-কর্মীরা। এর মধ্যে গ্রেপ্তার করা না হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা।
রবিবার (৫ জানুয়ারি) পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শনিবারের হামলার প্রতিবাদে ও জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করে গণঅধিকার পরিষদ। পরে সেখান থেকে সমাবেশ শেষে শাহবাগ থানার অভিমুখে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি শহিদ মিনার-টিএসসি-চারুকলা হয়ে বেলা সাড়ে ৫টায় শাহবাগ থানার সামনে গিয়ে দলের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নেয়। এ সময় তারা জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান থানার ভেতরে প্রবেশ করেন।
থানায় মিনিট ১০-১৫ পর অবস্থান শেষে বেরিয়ে আসেন তারা। পরে সাংবাদিকদের রাশেদ বলেন, ‘আমরা শনিবার থেকে আন্তরিকতা ও সৌজন্যতা দেখিয়েছি কিন্তু আমরা কোনো আশানুরূপ সহযোগিতা পাই নি। শাহবাগ থানার ওসির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম কিন্তু তার দেখা পাইনি আমরা। তবে রমনা জোনের ডিসির সঙ্গে কথা হয়েছে, আমরা তাকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছি। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছে, অনতিবিলম্বে জড়িতদের গ্রেপ্তর করা হবে। এর মধ্যে যদি আসামিদের গ্রেপ্তার না করা হয়, আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও করব। শুধু ঘেরাও করেই আমরা ক্ষান্ত হব না, আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ নিশ্চিত করব।’
রাশেদের এমন বক্তব্যের পরপরই কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করা হলে নেতা-কর্মীরা সন্ধ্যা ৬টার পরপরই শাহবাগ থানার সামনে থেকে সরতে শুরু করে ও যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু হয়।
এর আগে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অনুষ্ঠিত হওয়া বিক্ষোভ সমাবেশ একই আলটিমেটাম দেন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরুল হক নুর। ওই সময় তিনি বলেন, ‘হামলার ঘটনা ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। আয়োজকদের কথা ছিল যে হামলাটি ছাত্রদল করেছিল, কিন্তু পরে দেখা গেল আন্দোলনের আহতরা না কি হামলা করেছে। আমাদের দাবি সুস্পষ্ট, হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং অবিলম্বে বিচার নিশ্চিত করা। কিন্তু এখন পর্যন্ত পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয় নি। তাছাড়া স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কোনো পদক্ষেপ দেখি না। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফারুকের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।’
এসময় ওই সমাবেশে সংগঠনটি বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা এতে অংশ নেয়। এর আগে ৪ জানুয়ারি শহিদ মিনারে ‘ফ্যাসিবাদ বিলোপ ও নতুন সংবিধানের’ দাবিতে সমাবেশ ডাকে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের ফারুক হাসান। বক্তৃতা দেওয়া সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কিছু সমালোচনা করলে উপস্থিত থাকা কিছু ব্যক্তির সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় সৃষ্টি হয় ফারুকের। পরে তার ওপর হামলা চালানো হয়। এ হামালার পর গণঅধিকার পরিষদ থেকে দাবি করা হয়, এর পেছনে বিপ্লবী পরিষদ জড়িত। যদি এমন অভিযোগ অস্বীকার করছে বিপ্লবী পরিষদ।
এ ইউ/