ঈদ আরবি শব্দ, অর্থ ফিরে আসা। এ দিনটি যেহেতু প্রতি বছর ফিরে আসে মুসলিম জীবনে; তাই তাকে ঈদ বলা হয়।
ঈদুল ফিতর মুসলিম জাতির সবচেয়ে আনন্দের দিন।এই দিনে একে অপরের ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়।হিংসা-বিদ্বেষ,অহংকার,আত্মম্ভরিতা, আত্মশ্লাঘা, রাগ-ক্রোধসহ যাবতীয় কুপ্রবৃত্তি থেকে নিজের পবিত্রতা ঘোষণা করার এক মহা উপলক্ষ।
ইসলামি শরিয়তে ঈদ পালনের রয়েছে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা। নিম্নে ঈদের দিনের করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো-
গোসল করা
ঈদের দিন গোসল করার মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করা। হাদিসের মধ্যেও গোসল করার প্রমাণ পাওয়া যায়। হজরত ইবনে উমার (রা.) থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত যে, ‘তিনি ঈদুল ফিতরের দিনে ঈদগাহে যাওয়ার আগে গোসল করতেন’ (সুনানে বায়হাকি ৫৯২০)।
সুন্দর জামাকাপড় পরা
গোসল করার পর উত্তম জামাকাপড় পরিধান করা। আমাদের সাধ্যমতো উত্তম জামাকাপড় পরিধান করা উচিত (নতুন হতে হবে তেমন নয়) কারণ, আল্লাহ তার প্রদত্ত নেয়ামতের প্রকাশ দেখতে চান।
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ আল্লাহতায়ালা তার বান্দার ওপর তার প্রদত্ত নিয়ামতের প্রকাশ দেখতে পছন্দ করেন’। (সহিহ আল জামে ১৮৮৭)
ঈদের নামাজের আগে কিছু খাওয়া
ঈদুল ফিতরের দিন ঈদের নামাজ আদায় করার আগে আর ঈদুল আজহার দিন ঈদের নামাজের পর কিছু খাওয়া সুন্নাত। হজরত বুরাইদা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘নবি করিম (সা.) ঈদুল ফিতরের দিন না খেয়ে বের হতেন না, আর ঈদুল আজহার দিনে ঈদের সালাতের আগে কিছু খেতেন না’ (তিরমিজি শরিফ : ৫৪৫)।
হেঁটে ঈগাহে যাওয়া
ঈদগাহে হেঁটে যাওয়া সুন্নাত। হজরত আলী (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘সুন্নত হলো ঈদগাহে হেঁটে যাওয়া’। (তিরমিজি শরিফ : ৫৩৩)। আরেকটি সুন্নত হচ্ছে, এক রাস্তা দিয়ে ঈদগাহে যাওয়া আর অন্য রাস্তা দিয়ে ফেরা। হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে, ‘নবি করিম (সা.) ঈদের দিনে পথ বিপরীত করতেন। (সহিহ বুখারি : ৯৮৬)।
খুতবা শোনা
ঈদের নামাজ শেষে ঈদের খুতবা শ্রবণ করা। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শরিয়ত মোতাবেক খুতবা শ্রবণ করা ওয়াজিব।
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে সায়েব (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি নবি করিম (সা.)-এর সঙ্গে ঈদ উদযাপন করলাম। যখন তিনি ঈদের নামাজ শেষ করলেন, বললেন,‘ আমরা এখন খুতবা দেব। যার ভালো লাগে সে যেন বসে আর যে চলে যেতে চায় সে যেতে পারে’। (আবু দাউদ শরিফ : ১১৫৭)।
সাদাকাতুল ফিতর আদায় করা
ফিতরা দান করা। রমজান মাসে রোজার যে ত্রুটি হয়েছে তা পূরণার্থে অভাবগ্রস্ত আর গরিবদের যে খাদ্যসামগ্রী দান করা হয় তাই হলো সাদকায়ে ফিতর। হাদিসে বর্ণিত আছে, রাসূল (সা.) ঈদের নামাজে যাওয়ার আগে ফিতরা আদায় করার আদেশ দিলেন। (সহিহ বুখারি : ১৫০৩)।
এস এইচ/