ফিলিস্তিনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও প্রতিরোধের প্রতীক আল-আকসা মসজিদকে রক্ষায় রমজান মাসে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। সংগঠনটি ফিলিস্তিনিদের মসজিদে গিয়ে ইবাদত, ইতেকাফ ও প্রতিরোধ আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অনুরোধ জানায়। তাদের দাবি, এটি শুধু ধর্মীয় দায়িত্ব নয়, বরং ইসরাইলের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিরোধেরও অংশ।
হামাস এক বিবৃতিতে পশ্চিম তীর, জেরুজালেম ও ইসরাইলে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, “রমজানে আল-আকসা মসজিদে গিয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালান, সেখানে দৃঢ় থাকুন এবং ইতেকাফ করুন।” তারা আরও বলেছে, এই পবিত্র মাসে ইবাদত ও শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধে নিজেদের উৎসর্গ করতে হবে, যাতে আল-আকসাকে রক্ষা করা যায় এবং দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত করা যায়।
বিশ্বব্যাপী ফিলিস্তিনিদের প্রতিও সংহতির আহ্বান জানিয়েছে হামাস। তারা বলেছে, গাজা, পশ্চিম তীর ও জেরুজালেমের জনগণের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ব্যাপক কর্মসূচি ও উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। অন্যদিকে, আল-আকসা মসজিদের খতিব শেখ ইকরিমা সাবরি অভিযোগ করেছেন, ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার অজুহাতে ফিলিস্তিনিদের মসজিদে প্রবেশের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যা প্রকৃতপক্ষে তাদের দখলদার নীতিরই অংশ।
প্রতিবছর রমজানে এই ধরনের বিধিনিষেধ জারি করা হয়, যা ফিলিস্তিনিদের ইবাদতে বাধা সৃষ্টি করে। ফিলিস্তিনিরা মনে করেন, এটি পূর্ব জেরুজালেমের আরব ও ইসলামি পরিচয় মুছে ফেলার বৃহত্তর ইসরাইলি পরিকল্পনার অংশ। আল-আকসা মসজিদ ইসলাম ধর্মের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান হলেও ইহুদিরা এটিকে ‘টেম্পল মাউন্ট’ বলে দাবি করে এবং সেখানে দুটি ইহুদি মন্দির ছিল বলে উল্লেখ করে।
১৯৬৭ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধের সময় ইসরাইল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে এবং ১৯৮০ সালে পুরো শহরটি সংযুক্ত করার ঘোষণা দেয়। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কখনোই এটি স্বীকৃতি দেয়নি। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলের দখলদারিত্বকে অবৈধ ঘোষণা করে এবং পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে সব বসতি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়।
রমজানে আল-আকসা রক্ষায় ফিলিস্তিনিদের এই ঐক্যের ডাক ধর্মীয় ও রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ফিলিস্তিনি জনগণের বিশ্বাস, তাদের ঐক্য ও প্রতিরোধই একদিন এই পবিত্র স্থানকে দখলদারত্ব থেকে মুক্ত করবে।
সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি
এ ইউ/