নাচে-গানে মাতিয়ে জাঁকজমক আয়োজনে আবুধাবিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে বাংলা বর্ষবরণ ও বৈশাখী উৎসব-১৪৩২ উদযাপন করা হয়েছে। শনিবার (১৮ এপ্রিল) বেলা ১১টায় আবুধাবির শেখ খলিফা-বিন-যায়েদ বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুলে ফিতা কেটে বৈশাখী মেলার শুভ উদ্বোধন করেন আবুধাবিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ ও রাষ্ট্রদূত পত্নী উম্মে রাম্মান।
প্রথমবারের মতো এবার বৈশাখী উৎসবে যোগ দেন মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড, গাম্বিয়া, মালদোভা ও বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার রাষ্ট্রদূত পত্নীগণ। দিনব্যাপী এই আয়োজনে আমিরাতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংস্কৃতিমনা ও বিনোদনপ্রিয় হাজার হাজার প্রবাসী উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলেন। স্কুলের সুবিশাল অডিটোরিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে বাইরের মাঠে ছড়িয়ে পড়ে প্রবাসীদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি ও আনন্দ উল্লাস। এই মেলার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, শিল্প, সংগীত ও পাকশৈলীকে বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশি ও আন্তর্জাতিক অতিথিদের সামনে তুলে ধরা।
দিনব্যাপী এই উৎসবে নানা আনুষ্ঠানিকতার মাঝে ছিল নারী ও শিশুদের আকর্ষণীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, ঐতিহ্যবাহী নানান ধরনের খাবার ও দেশীয় হস্তশিল্প প্রদর্শনী, আলোচনাসভা, সংগীত, ঐতিহ্যবাহী নৃত্য, কস্টিউমস শো, পুরস্কার বিতরণ ও উত্তেজনাপূর্ণ র্যাফেল ড্র।
বর্ষবরণের এই মেলায় ১৬টি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন বাঙালির ঐতিহ্যবাহী নামে স্টল স্থাপন করে। বাংলাদেশ দূতাবাসের ‘দূতাবাস কর্নার’, বাংলাদেশ সমিতির ‘আমার বাংলাদেশ’, শেখ খলিফা বিন জায়েদ স্কুলের ‘আহার বিহার’, ইঞ্জিনিয়ারস অ্যান্ড আর্কিটেক্টের ‘ঐক্যতান’, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারস অ্যাসোসিয়েশনের ‘দুরন্ত বৈশাখ’, বাংলাদেশ মহিলা সমিতির ‘রঙের বৈশাখ’, বরিশাল সমিতির ‘বৈঠক খানা’। এছাড়া বাংলাদেশ বিমান, জনতা ব্যাংক, আহলিয়া ও ইনডেক্স এক্সচেঞ্জ, প্রাণ, দেশীয় মুখরোচক খাবারের দোকান ও শিশুদের খেলনার পসরা নিয়ে স্টল বসে এবারের মেলায়। প্রতিটি স্টলে ছিল ঐতিহ্যবাহী খাবার, পান্তা-ইলিশ, ফুচকা, জিলাপি, সেমাই ও বিভিন্ন মিষ্টান্নের স্টল ছিল দর্শনার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্র।
রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদের সভাপতিত্বে ও কাউন্সিলর লুৎফুন নাহার নাজিমের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত দুবাইয়ের কনস্যুলেট জেনারেল মো. রাশেদুজ্জামান, দূতাবাস ও কন্স্যুলেট পরিবার, পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কমিউনিটি নেতা ইঞ্জিনিয়ার সালাউদ্দিন আহমেদ, আব্দুস সালাম তালুকদার, আবুল বাসার, জাকির হোসেন খতিব, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মোহাম্মদ সারওয়ার ভুট্টো, প্রকৌশলী মোহাম্মাদ আলী, প্রকৌশলী মিজানুর রহমান সোহেল, নূর হোসেন সুমন প্রমুখ।
পরিবর্তনশীল বৈষম্যহীন সমাজে প্রথম পহেলা নববর্ষ উদযাপনে রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ সকলকে স্বাগত জানান। এসময় তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, এ দেশের মাটিতে যেন বাংলাদেশিদের একটি সুশৃঙ্খল জাতি হিসেবে পরিচিত করতে পারি।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে আকর্ষণীয় র্যাফেল ড্র ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়।