প্যান অ্যামের বিশাল এই উজোড়াজাহাজ তেনেরিফের একমাত্র রানওয়েতে ধীরে ধীরে এগিয়ে চলছিল, কিন্তু হঠাৎ যাত্রীরা বাঁ দিকে প্রচণ্ড মোচড় অনুভব করলেন। যাত্রী ইসোবেল মন্ডা সঙ্গে সঙ্গে জানালার দিকে তাকিয়ে স্বামী টনিকে বললেন, ‘ওই নির্বোধ লোকটা (পাইলট) রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়বে!’
আসলেই পাইলট ক্যাপ্টেন ভিক্টর গ্রাবস ও তাঁর ফার্স্ট অফিসার রবার্ট ব্র্যাগ তখন উড়োজাহাজটিকে রানওয়ে থেকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কারণ, ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন রানওয়েতে তাঁরা আচমকাই দেখলেন, কেএলএম ৭৪৭ ফ্লাইট তাঁদের দিকে দ্রুততম গতিতে এগিয়ে আসছে। গ্রাবস ও তাঁর ক্রু মরিয়া হয়ে সরে যাওয়ার চেষ্টা করলেন, কিন্তু পারলেন না।
স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের তেনেরিফ দ্বীপের লস রোদেওস বিমানবন্দরের রানওয়েতে ১৯৭৭ সালের ২৭ মার্চ, স্থানীয় সময় বিকেল ৫টার কিছু পর প্যান অ্যাম ১৭৩৬ ও কেএলএম ৪৮০৫-এর মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। দুটি উড়োজাহজই ছিল বোয়িংয়ের। চার দশকের বেশি সময় পরেও এই দুর্ঘটনাকে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা হিসেবে মনে করা হয়। ওই দুর্ঘটনায় ৫৮৩ জন নিহত হয়েছেন। অনেক যাত্রী আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনাটি ‘তেনেরিফের বিপর্যয়’ নামে পরিচিত হয়ে আছে।
দুর্ঘটনার শিকার উড়োজাহাজ দুটি মূলত ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের গ্রান কানারিয়া দ্বীপের রাজধানী লাস পালমাস বিমানবন্দরে আসার কথা ছিল। কিন্তু সেদিন সকালে দ্বীপপুঞ্জের একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ওই বিমানবন্দরের টার্মিনালে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এ কারণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ আহতও হন। এরপর বিমানবন্দরে একটি টেলিফোনে ফোন করে আরও কয়েকটি ‘বোমা’ হামলা হতে পারে বলে হুমকি দেওয়া হয়।
এস এইচ/