দক্ষিণ কোরিয়ার সাংবিধানিক আদালত অভিশংসিত প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সুকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনর্বহাল করেছে। সাংবিধানিক আদালত সোমবার (২৪ মার্চ) ৭-১ ভোটে রায় দেয় যে, হানের অভিশংসন খারিজ করা উচিত। ফলে তাকে দেশের সর্বোচ্চ পদে পুনর্বহাল করা হয়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
আদালতের পাঁচ বিচারপতি বলেছেন, ৭৫ বছর বয়সী হানের বিরুদ্ধে অভিশংসনের জন্য যথেষ্ট প্রমাণ নেই। যদিও তার বিরুদ্ধে আনা অভিশংসন প্রস্তাব বৈধ ছিল।
প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের অভিশংসনের পর শুরু হওয়া রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে এটিকে সর্বশেষ নাটকীয় মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কারণ আদালতের আটজন বিচারপতি আলাদাভাবে ইউনের ভাগ্য নির্ধারণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। ইউনকে গত ৩ ডিসেম্বর স্বল্পসময়ের জন্য সামরিক আইন জারির পর বরখাস্ত করা হয়েছিল।
এদিকে দুইজন বিচারপতি মত দেন যে, সংসদে হানের অভিশংসন প্রস্তাব শুরু থেকেই বৈধ ছিল না, কারণ ৩০০ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে মাত্র ১৯২ জন এটি সমর্থন করেছিলেন, যা দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার কম।
প্রেসিডেন্ট ইউন অভিশংসিত হওয়ার পর ১৪ ডিসেম্বর হানকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তবে কমপক্ষে তিনজন নতুন বিচারপতি নিয়োগে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে দুই সপ্তাহের মধ্যেই তাকেও দায়িত্ব থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
আদালতের রায় ঘোষণার পর এক টেলিভিশন ভাষণে হান আদালতের ‘বিচক্ষণ সিদ্ধান্তের’ জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং দেশের ভূরাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মনোযোগী হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
এই রায় এমন এক সময়ে এলো, যখন সাংবিধানিক আদালত এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি যে, প্রেসিডেন্ট ইউনের অভিশংসন চূড়ান্তভাবে বহাল থাকবে নাকি তাকে পুনরায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনর্বহাল করা হবে।
আদালত গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ইউনের ভাগ্য নিয়ে বিচার-বিবেচনা করছে এবং কয়েক দিনের মধ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্তত আটজন বিচারপতির মধ্যে ছয়জন যদি ইউনের অভিশংসনকে বহাল রাখেন, তাহলে তিনি চিরতরে পদচ্যুত হবেন।
যদি ইউন প্রেসিডেন্টের পদ থেকে অপসারিত হন, তাহলে তার উত্তরসূরি নির্বাচনের জন্য ৬০ দিনের মধ্যে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়াও ইউন আলাদাভাবে ফৌজদারি অভিযোগের মুখোমুখি হচ্ছেন, যার মধ্যে স্বল্পস্থায়ী সামরিক আইন ঘোষণার জন্য বিদ্রোহের অভিযোগ রয়েছে।
দোষী প্রমাণিত হলে তিনি সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ডের সম্মুখীন হতে পারেন।