Homeঅর্থনীতিবাংলাদেশের ব্যাংকখাতের ঋণমান স্থিতিশীল থেকে ‘নেতিবাচকে’ নামাল মুডিস

বাংলাদেশের ব্যাংকখাতের ঋণমান স্থিতিশীল থেকে ‘নেতিবাচকে’ নামাল মুডিস


বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়ে যাওয়ায় এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের কার্যক্রম চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে মতামত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক রেটিং এজেন্সি মুডিস। সংস্থাটির মতে বাংলাদেশের ঋণমান ‘বি-ওয়ান’ থেকে কমিয়ে ‘বি-টু’ তে নামিয়েছে। এর ফলে পূর্বাভাসের স্থিতিশীল অবস্থার অবনতি ঘটে নেতিবাচক অবস্থায় চলে গেছে।

এতে সম্পদের ঝুঁকি বাড়ছেও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। যা ব্যাংকগুলোর মুনাফা ও স্থিতিশীলতার ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করবে। ২০২৫ সালের এপ্রিলে কার্যকর হতে যাওয়া খেলাপি ঋণের নতুন ও কঠোর শ্রেণিবিন্যাসের নিয়মগুলো পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করে তুলতে পারে।

আজ বুধবার প্রকাশিত বিশ্বখ্যাত ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্পদের মানের অবনতি, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং দুর্বল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। যদিও এর আগে সংস্থাটি পূর্বাভাস দিয়েছিল যে,২০২৫ সালের জুনে শেষ হওয়া অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে আসবে, যা আগের বছরের ৫ দশমিক ৮ শতাংশের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়ে যাওয়ায় এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের কার্যক্রম চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা, পোশাক খাতের সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাঘাত এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা হ্রাস অর্থনৈতিক মন্দার অন্যতম কারণ। আর মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক ১৫ মাসের ব্যবধানে নীতিগত সুদের হার ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করেছে। তবে চলতি ২০২৫ সালে মূল্যস্ফীতি উচ্চমাত্রায় প্রায় ৯ দশমিক ৮ শতাংশে থাকার আশঙ্কা করছে মুডিস।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের সম্পদের ঝুঁকি বাড়ছে, কারণ খেলাপি ঋণের হার বেড়ে চলেছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে সমগ্র ব্যাংক ব্যবস্থায় খেলাপি ঋণের হার ১৭ শতাংশে পৌঁছেছে, যা মাত্র ৯ মাস আগে ৯ শতাংশ ছিল। আর অর্থনৈতিক পরিবেশের অবনতি হওয়ায় সম্পদের মানও আরও দুর্বল হবে। এছাড়া সামাজিক অস্থিরতা কিছু দেশীয় ব্যবসার স্থিতিশীলতাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করেছে, যার ফলে চাহিদা কমেছে, সরবরাহ শৃঙ্খল বাধাগ্রস্ত হয়েছে এবং শ্রম ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

মুডিস বলছে, চ্যালেঞ্জের মধ্যেও সামগ্রিক মূলধন পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে, কারণ ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে আসছে। তবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর গড় মূলধন পর্যাপ্ততার অনুপাত (সিএআর) ছিল ঋণাত্বক ২ দশমিক ৫ শতাংশ, যা বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ৯ দশমিক ৪ শতাংশ গড়ের তুলনায় অনেক নিচে এবং নিয়মিত ন্যূনতম মূলধন চাহিদারও নিচে। খেলাপি ঋণের উচ্চ হার ও দুর্বল মুনাফার কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো মূলধনের সংকটে থাকবে, কারণ সরকার নতুন করে মূলধন সহায়তা না দিলে তাদের অবস্থার উন্নতি হবে না।

মুডিসের মতে, সরকারের সহায়তা অব্যাহত থাকবে। কারণ ‘সংক্রমণ ঝুঁকি’ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক শিথিলতা ও তারল্য সহায়তা প্রদান করতে পারে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত