জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম খান মিলন বলেছেন, ‘আমাদের দেশে অবশ্যই সংস্কার করা প্রয়োজন। তবে দীর্ঘ সময়ের জন্য আমরা এই সরকারকে থাকতে বলি না। আমরা দুটি রোডম্যাপ চাই; সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ আমরা চাই। দেশে একটি সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন আমরা চাই। তবে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন জাতীয় ঐক্যের। কিন্তু আমরা হরিলুটের আভাস দেখতে পাচ্ছি। তবে যেকোনও মূল্যে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীকে।’
সোমবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ কালীবাজার এলাকায় শিল্পকলা একাডেমিতে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বইঠার তাণ্ডবে জামায়াতে ইসলামীর শহীদ ভাইদের স্মরণে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
জাতীয় স্বার্থের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জামায়াতের পক্ষ থেকে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে, আমরা কোনও ব্যক্তি বা দলীয় স্বার্থ চিন্তা করবো না। জাতীয় স্বার্থ আমাদের সামনে প্রধান গুরুত্ব পাবে। এই ঐক্যের ভিত্তি হচ্ছে জুলাইয়ের আন্দোলন। নারী-পুরুষসহ সব ধরনের সব পেশার মানুষ এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল। এটা কোনও দলীয় আন্দোলন ছিল না। সবার ঐক্যবদ্ধ চেষ্টায় স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের দাবিতে এই আন্দোলন করা হয়। আমরা প্রয়োজনে আবারও জীবন দেবো। কিন্তু এই স্বাধীনতাকে ব্যর্থ হতে দেবো না।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য মাওলানা মাঈনুদ্দিন আহমদ বলেন, ‘অনেক মানুষ ভয় পাচ্ছে যে, কোনও এক ফাঁকে আওয়ামী লীগ দেশে এসে যেতে পারে, ক্ষমতা নিয়ে যেতে পারে। আমি বাংলাদেশের সকল মানুষকে আশ্বস্ত করতে চাই, আওয়ামী লীগ আর কোনোদিন বাংলাদেশে আসতে পারবে না, ক্ষমতায়ও আসতে পারবে না।’
আওয়ামী লীগের দোসররা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না আসতে পারলেও তাদের দোসররা যারা এই দেশে আছে, তারা ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে। দেশে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের দোসররা পালিয়ে থাকলেও আমাদের দেশের কেউ না কেউ তাদের লালন-পালন করতেও পারে। আমি তাদের সতর্ক করে দিতে চাই, আওয়ামী লীগের খুনি, সন্ত্রাসী ও দোসরদের কেউ যদি আশ্রয়-প্রশ্রয় দেন আপনাদেরও শেখ হাসিনার পরিণতি হবে।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভায় কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও মহানগর শাখার আমীর মুহাম্মদ আবদুল জব্বারের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জামায়াতে ইসলামীর নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মনোয়ার হোসাইন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সভাপতি হাফেজ আব্দুল মোমিন প্রমুখ।