Homeদেশের গণমাধ্যমেআফগানিস্তানের নারী ক্রিকেট ইস্যুতে চাপের মুখে আইসিসি

আফগানিস্তানের নারী ক্রিকেট ইস্যুতে চাপের মুখে আইসিসি


আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) আফগানিস্তানের ক্রিকেট বোর্ডের (এসিবি) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছে। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ কড়া ভাষায় আইসিসিকে আফগানিস্তানের সদস্যপদ স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছে, কারণ তালেবান শাসনের অধীনে নারীদের ক্রিকেট খেলার অনুমতি নেই।

শুক্রবার (৭ মার্চ) আইসিসির সচিব জয় শাহের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ কড়া অবস্থান নেয়।

‘আমরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলকে (আইসিসি) আহ্বান জানাচ্ছি যে, তালেবান শাসিত আফগানিস্তানকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বরখাস্ত করা হোক যতক্ষণ না পর্যন্ত নারীরা পুনরায় শিক্ষা ও খেলাধুলার সুযোগ পায়।’—চিঠিতে জানানো হয়।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আইসিসির জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার নীতিমালার ভিত্তিতে একটি আনুষ্ঠানিক নীতি প্রণয়নেরও দাবি জানিয়েছে।

এই দাবির সময়টাও তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এটি এসেছে দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালের ঠিক আগে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভস ডিরেক্টর মিনকি ওয়ার্ডেন মনে করিয়ে দিয়েছেন, লস অ্যাঞ্জেলেস ২০২৮ অলিম্পিকে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর তালেবানের এই নিষেধাজ্ঞা অলিম্পিক চার্টারের স্পষ্ট লঙ্ঘন। ‘অলিম্পিক চার্টার অনুযায়ী, ‘খেলাধুলার সুযোগ পাওয়া প্রতিটি মানুষের অধিকার।’ কিন্তু তালেবান নারীদের খেলাধুলা থেকে সম্পূর্ণভাবে বঞ্চিত করেছে, যা অলিম্পিক নীতির পরিপন্থী। এই পরিস্থিতিতে আইসিসির উচিত নারীদের প্রতি বৈষম্য দূর করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা,’—ওয়ার্ডেন জানান।

২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর নারীদের সব ধরনের অধিকার খর্ব করা হয়েছে, যার মধ্যে খেলাধুলা অন্যতম। আফগান নারী ক্রিকেটারদের অনেকেই অস্ট্রেলিয়ায় গোপনে বসবাস করছেন।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ চিঠিতে অতীতের নজিরও উল্লেখ করেছে। ১৯৯৯ সালে তালেবানের শাসনকালে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (IOC) আফগানিস্তানের জাতীয় অলিম্পিক কমিটিকে নিষিদ্ধ করেছিল।

‘সেই সময় বিশ্ব মানবাধিকারের পক্ষে কঠোর অবস্থান নিয়েছিল। তাহলে ক্রিকেটের ক্ষেত্রে এখন এত নীরবতা কেন?’—চিঠিতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

আইসিসি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর চিঠির জবাব দেয়নি। তবে জয় শাহ সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন:

‘আমরা আফগান নারীদের ক্রিকেট নিয়ে চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে সচেতন। আমরা খেলোয়াড়দের উদ্বেগ বুঝতে পারছি এবং তাদের জন্য আইসিসির সংবিধান ও আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে সমাধানের পথ খুঁজছি।’

কিন্তু সমালোচকদের মতে, আইসিসি শুধুমাত্র ‘পর্যালোচনা’র কথা বলে সময়ক্ষেপণ করছে। এর আগে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ECB) আফগান ক্রিকেট বোর্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানালেও তেমন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

এখন প্রশ্ন হলো, আইসিসি কি ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়াবে, নাকি নিষ্ক্রিয় থাকবে?

নারীদের ক্রিকেট সমান অধিকারের প্রশ্নে সংগঠনটির ভূমিকা এখন নির্ধারণ করবে ক্রিকেট সত্যিকারে কতটা উদার ও অন্তর্ভুক্তিমূলক। ২০২৮ অলিম্পিক সামনে রেখে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা কী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত