জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হলে আগে স্থানীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা প্রয়োজন। যদি স্থানীয় নির্বাচন ঠিকভাবে না হয়, তাহলে জাতীয় নির্বাচনও সুষ্ঠু করা সম্ভব হবে না। তাই জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে আগে সুষ্ঠু স্থানীয় নির্বাচন নিশ্চিত করা দরকার।
জাতীয় প্রেসক্লাবে গতকাল শনিবার এক সংলাপে বক্তারা এমন অভিমত দিয়েছেন। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনবিষয়ক এ সংলাপের আয়োজন করে সেন্ট্রার ফর পলিসি অ্যানালাইসিস অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি (সিপিএএ)।
সংলাপে সঞ্চালক ছিলেন সিপিএএর মডারেটর ও সাবেক সচিব অধ্যাপক ড. মো. শরিফুল আলম। মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক-প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাফিউল ইসলাম।
সংলাপে সাবেক সচিব মো. আবদুল কাইয়ুম বলেন, সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের জন্য আগে স্থানীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা প্রয়োজন। স্থানীয় নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে জাতীয় নির্বাচনও সুষ্ঠু করা সম্ভব হবে না।
অন্তর্বর্তী সরকারের সময় শেষ হয়ে আসছে মন্তব্য করে নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘ডিসেম্বরে তাঁরা নাকি নির্বাচন দেবেন। রাজনীতিবিদদের মধ্যে কোনো পরিবর্তন আসেনি। কোনো সংস্কার আসেনি। কিন্তু তাঁরাই তো নির্বাচন করবেন। নতুন পার্টি যেটা গঠিত হয়েছে, তাঁদের মধ্যেও কোনো পরিবর্তন দেখিনি।’
নতুন দলও চাঁদাবাজি করছে বলে শোনা যাচ্ছে জানিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন আরও বলেন, ‘এগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমি মনে করি, স্থানীয় নির্বাচন আগে হওয়া উচিত। আগে হলে অনেক উপকার হবে।’
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম বলেন, ‘বেশ কিছু জরিপে দেখা গেছে মানুষ স্থানীয় নির্বাচন আগে চায়। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এ নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে এবং মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী স্থানীয় নির্বাচন আগে করতে হবে।’
জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের পর অনেক কিছুই পরিবর্তন হবে বলে ভেবেছিলেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান। এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কিন্তু তা হয়নি। আগে জাতীয় না স্থানীয় নির্বাচন তার থেকে গুরুত্বপূর্ণ আমরা রাষ্ট্রকে কোথায় নিতে চাই। আমরা কি ভদ্র লোকের রাষ্ট্র চাই, নাকি সবার রাষ্ট্র চাই—এ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। রাজনৈতিক দল ও অর্থনৈতিক সংস্কারের বিষয়ে কোনো কমিশন হয়নি। অথচ এটা সব থেকে জরুরি ছিল।’
সংলাপে আরও বক্তব্য দেন অতিরিক্ত সচিব (অবসরপ্রাপ্ত) ড. খন্দকার রাশেদুল হক, বিএনএনআরসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ এইচ এম বজলুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শরীফুল ইসলাম প্রমুখ।