১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর এই প্রথম শুরু হলো বাংলাদেশ-পাকিস্তান সরকারি ব্যবস্থাপনায় সরাসরি বাণিজ্য। দুই দেশের মধ্যে সরকারি পর্যায়ে (জিটুজি) সই করা চুক্তির আওতায় কেনা চালের প্রথম চালান নিয়ে আসা জাহাজ আজ বুধবার চট্টগ্রাম বন্দরের সিসিটি-১ ইয়ার্ডে বার্থিং পেয়েছে।
খাদ্য বিভাগের চলাচল ও সংরক্ষণ নিয়ন্ত্রক দপ্তর সূত্রে জানা যায়, পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার টন চাল আমদানির ব্যাপারে গত ১৪ জানুয়ারি ঢাকায় সরকারি পর্যায়ে যে সমঝোতা স্মারক সই হয়, তার আওতায় প্রথম চালানটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। প্রয়োজনীয় সার্ভে, নমুনা পরীক্ষা, শুল্কায়নসহ প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর এই জাহাজ থেকে এসব আতপ চাল খালাস শুরু হবে। এখানে ৬০ শতাংশ খালাস হবে। অবশিষ্ট চাল নিয়ে জাহাজটি চলে যাবে মোংলায়। সেখানে বাকি চাল খালাস হবে।
খাদ্য পরিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বাজার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে আতপ চাল আমদানির জন্য খাদ্য অধিদপ্তর এবং ট্রেডিং করপোরেশন অব পাকিস্তানের (টিসিপি) মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। জিটুজি ভিত্তিতে আমদানির জন্য টিসিপির চেয়ারম্যান সৈয়দ রাফিও বশির শাহ এবং খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আব্দুল খালেক সমঝোতা স্মারকে সই করেন। এর আওতায় প্রথম চালানটি পৌঁছাল। পাকিস্তান ন্যাশনাল শিপিং করপোরেশনের বাল্কক্যারিয়ার এমভি সিবি জাহাজ এসব চাল এনেছে। দ্বিতীয় চালানটি কয়েক দিনের মধ্যে শিপমেন্ট হওয়ার কর্মসূচি রয়েছে। প্রতি টনের দাম পড়েছে ৪৯৯ ডলার।
এ প্রসঙ্গে খাদ্য বিভাগের চলাচল ও সংরক্ষণ নিয়ন্ত্রক জ্ঞান প্রিয় বিদূর্শী চাকমা বলেন, ‘পাকিস্তান থেকে ২৬ হাজার ২৫০ টন চাল নিয়ে আসা জাহাজ এরই মধ্যে বন্দরে চট্টগ্রাম বন্দরের সিসিটি-১ ইয়ার্ডে ভিড়েছে।
জাহাজটির স্থানীয় এজেন্ট রেনু শিপিং লাইনস সূত্রে জানা যায়, পোর্ট কাসিম থেকে জাহাজটি চাল বোঝাই করেছে। এতে ২৬ হাজার টনের বেশি চাল রয়েছে।
গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্যিক সংযোগ চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়। গত নভেম্বরে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানি পণ্যবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম আসে। তবে তা ছিল বেসরকারি খাতে।
বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ উৎপাদনকারী দেশ হওয়া সত্ত্বেও প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ চাল অন্য দেশ থেকে কিনতে হয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ দুই লাখ টন চাল আমদানি করেছিল। সেগুলো আনা হয়েছিল ভারত, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও মিয়ানমার থেকে। এবারও এসব দেশ থেকে আমদানি হচ্ছে, সেই সঙ্গে বাংলাদেশে চাল রপ্তানিকারক দেশসমূহের তালিকায় যুক্ত হলো পাকিস্তান।