বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় স্থানীয় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে ৫৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে যমুনা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন ঠিকাদার। এ নিয়ে গত শুক্রবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন প্রকল্পটির সাব-ঠিকাদার সোহেল রানা। অভিযোগের অনুলিপি উপজেলা সেনাক্যাম্প, থানার ওসি ও কাজলা ইউনিয়ন মেম্বারের কাছে দিয়েছেন তিনি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের মাদারগঞ্জ ঘাট সংলগ্ন এলাকায় ৫৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে যমুনা নদীর বাম তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পটির ৬ ও ৭ নম্বর প্যাকেজের কাজ বাস্তবায়ন করছে তমা কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড। সোহেল রানা ওই প্রকল্পে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করার কাজে কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। গত বছর থেকে তিনি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ করে আসছেন। এ অবস্থায় গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কাজলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইসহাক প্রামাণিক এবং সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ৫০-৬০টি মোটরসাইকেলে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী তার প্রকল্প সাইডে হামলা চালান। তারা প্রকল্পের ম্যানেজার জুয়েলকে বেধড়ক মারধরের পর প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন। পরে প্রকল্পের সব কাজ বন্ধ করে দেন বিএনপির নেতারা।
এ বিষয়ে সাব-ঠিকাদার সোহেল রানা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কাজলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইসহাক এবং সাধারণ সম্পাদক মহিদুল আমার ম্যানেজারকে মারধর করে প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দিয়েছি আমি। তবে গত দুই দিনেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে কাজলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইসহাক প্রামাণিক বলেন, ‘সাব-ঠিকাদার সোহেল রানার অভিযোগ মিথ্যা। নদীর তীর সংরক্ষণের কাজে আমরা বাধা দিইনি। সোহেল রানা নাশকতার মামলার আসামি। আমার জানামতে প্রকল্পের কাজ এখনও চলমান আছে।’
সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামিরুল ইসলাম বলেন, ‘রবিবার বিকাল পর্যন্ত অভিযোগের অনুলিপি হাতে পাইনি। পেলে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার রহমান বলেন, ‘অভিযোগটি পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’