রোজার নিয়ত


ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে রোজা তৃতীয়। ইসলামের নিয়মানুযায়ী রমজান মাসে প্রতিটি সুস্থ-সবল মানুষের জন্য রোজা রাখা বাধ্যতামূলক।

তাই ফজরের আগে সেহরি খাওয়ার মাধ্যমে রোজা শুরু করতে হয় এবং সন্ধ্যায় ইফতারের মাধ্যমে দিনের রোজার সমাপ্তি ঘটে।

এ দুটি সময়ে নিয়ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

চলুন জেনে নেওয়া যাক রোজার নিয়ত-

রোজার আরবি নিয়ত:

نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم

রোজার নিয়তের বাংলা উচ্চারণ

নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম, মিন শাহরি রমাদানাল মুবারাক; ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু, ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।

রোজার নিয়তের বাংলা অর্থ

হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার নিয়্ত করলাম। তুমি আমার পক্ষ থেকে আমার রোজা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন রোজা ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে তোমরা পরহেজগার তথা খোদাভীরু হতে পার।’ (সূরা বাকারা : ১৮৩)।

রুহুল মা’আনী, আল বিদায়া ও আইনি প্রভৃতি তাফসিরগ্রন্থে বলা হয়েছে, ‘তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর’ বলে বোঝানো হচ্ছে, হযরত আদম আ. থেকে রাসুল সা. পর্যন্ত সকল যুগের মানুষ, তথা সকল নবীর শরীয়তের রোজা পালনের বাধ্যবাধকতা ছিল নামাজের মতোই।

হযরত আদম আ.-এর যুগে প্রতি মাসে তিনটি রোজা রাখার বিধান ছিল। হযরত দাউদ আ. একদিন পর একদিন রোজা রাখতেন।

পূর্বেকার শরীয়তসমূহে রমজান মাসের ৩০টি রোজা ফরজ ছিল কি না- এ প্রশ্নের উত্তরে মুফাসসির ও ঐতিহাসিকদের ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে।

ইসলামী শরীয়তের রোজা ফরজ হওয়া সম্পর্কে হাফেজ ইবনে হাজার রহ. বলেন, রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার পূর্বে মুসলমানদের ওপর ১০ মুহররমের রোজা ফরজ ছিল। অতঃপর রমজানের রোজার হুকুম নাজিল হলে উক্ত রোজার বাধ্যবাধকতা রহিত হয়ে যায়।

আল্লামা ইবনে কাসির রহ. স্বীয় তাফসীরগ্রন্থে মুসনাদে আহমদ থেকে হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রা.-এর একটি দীর্ঘ বর্ণনা উল্লেখ করেছেন।

এখানে বলা হয়েছে, ইসলামের শুরুতে রোজা তিনটি স্তর অতিক্রম করে।

রাসুল হিজরত করে মদিনায় গমন করলে তিনি প্রতি মাসে তিনটি করে রোজা রাখতেন। তার সাথে আশুরার রোজাও পালন করতেন।

অতঃপর রমজান মাসের রোজা ফরজ হয়। দুই. রমজান মাসের রোজার হুকুম এলে প্রথম দিকে মুসলমানদের এখতিয়ার দেওয়া হয় যে, যার ইচ্ছা রাখবে এবং যার ইচ্ছা ফিদিয়া দিবে।

তারপর আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যারা রমজান মাসকে পায়, তারা অবশ্যই রোজা রাখবে।’ (সূরা বাকারা : ১৮৫)। এই আদেশের ফলে মুসাফির ও পীড়িত নয়, এমন প্রত্যেক নর-নারীর ওপর রোজা পালন আবশ্যকীয় হয়ে পড়ে।

রোজা কোন মাসে ফরজ হয়েছিল, এই সম্পর্কে আল্লামা ইবনে কাসীর রহ. ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ গ্রন্থে বলেন, হিজরি দ্বিতীয় সনের শাবান মাসে বদর যুদ্ধের আগে রমজানের রোজা ফরজ করা হয়।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত