রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মূল ফটকের সামনে টানা ১৬ ঘণ্টা ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের ব্যানারে অবস্থান নেওয়া আন্দোলনকারীরা।
এর আগে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে তাদের এই অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। দিনভর কর্মসূচি পালন করে দাবি আদায় না হওয়ায় মধ্যে রাতেও এ অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যেতে দেখা গেছে। তাদের অভিযোগ, আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে। এ সময় তারা এক দফা দাবি উত্থাপন করেন।
রাত ১টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সরেজমিন দেখা যায়, জুলাই আহত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করতে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা খুলা আকাশের নিচে অবস্থান করায় আন্দোলনকারীদের কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি আহত নারীরা তাদের শিশু সন্তানদের নিয়ে সেখানে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
সেখানে অবস্থান নেওয়া আহত একজন শিক্ষার্থী মো. আরমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমাদেরকে তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে সরকার বৈষম্য তৈরি করছে। অনেক গুলিবিদ্ধ যারা আছেন তাদেরকে সি ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে যা স্পষ্ট আমরা বৈষম্য দেখছি। তাই আমরা দুইটি ক্যাটাগরি চাই। আমাদের এ দাবি না আদায় হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাব। দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত আমরা একই জায়গায় অবস্থান করব।
তার আগে আজ সকাল থেকেই তারা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। বিকালের দিকে মূল ফটক অবরুদ্ধ করে সেখানে অবস্থান নেন। ফলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ভেতরে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। মধ্যে রাতেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তাদেরকে ঘিরে রাখতে দেখা গেছে।
বর্তমানে তাদের দাবিগুলো হচ্ছে:
ক্যাটাগরি পুনর্বিবেচনা, পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ
আন্দোলনকারীরা দাবি করেছেন, আহতদের জন্য নির্ধারিত ক্যাটাগরি ৩টি থেকে কমিয়ে ২টি করা হোক। সেই সঙ্গে পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ নীতিমালা পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
ক্যাটাগরি-এ (কর্মে অক্ষম): যে-সব আহত যোদ্ধারা স্থায়ীভাবে কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন (যেমন- পঙ্গুত্ব, চোখ হারানো, গুরুতর বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ আঘাত), তাদের জন্য মাসিক ভাতা ২০ হাজার টাকা। এককালীন অনুদান: আগে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এই ভাতা বাড়াতে হবে। কর্মসংস্থান: পরিবারে দায়িত্বশীল সদস্যদের সরকারি বা আধাসরকারি পর্যায়ে প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
ক্যাটাগরি-বি (কর্মে সক্ষম): যে-সব আহত যোদ্ধা সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরবেন, তাদের জন্য মাসিক ভাতা ১৫ হাজার টাকা। এককালীন অনুদান: পূর্বের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এই ভাতা বাড়াতে হবে। কর্মসংস্থান: প্রশিক্ষণ ও সরকারি বা আধাসরকারি পর্যায়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।