গতকাল ভারতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন নির্মাতা জাহিদুর রহিম অঞ্জন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে লিভারের জটিলতায় ভুগছিলেন জাহিদুর রহিম অঞ্জন। কয়েক মাস ধরে বেঙ্গালুরুর স্পর্শ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। গত সপ্তাহেই তাঁর লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা। অস্ত্রোপচারের পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। এরপর লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় তাঁকে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এই গুণী নির্মাতা।
২০১৪ সালে আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের গল্প রেইনকোট অবলম্বনে জাহিদুর রহিম অঞ্জন নির্মাণ করেন ‘মেঘমল্লার’। এই সিনেমার জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালক ও শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।
১৯৯০ সালে আন্তন চেখভের গল্প অবলম্বনে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মর্নিং’ নির্মাণ করেন অঞ্জন। এটি তাঁর পরিচালিত প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটি কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়। ২০০৭ সালে বাঙালি চিন্তাবিদ অতীশ দীপঙ্করের জীবনী নিয়ে তিনি নির্মাণ করেন ‘শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্কর’।
জাহিদুর রহিম অঞ্জন ভারতের পুনে ফিল্ম ইনস্টিটিউটে চলচ্চিত্র বিষয়ে ডিগ্রি নিয়েছেন। স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ-এ ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে শিক্ষকতা করতেন তিনি। তিনি বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরামের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। ২০০৪ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরামের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
এ বছর মুক্তি পাবে জাহিদুর রহিম অঞ্জনের শেষ সিনেমা ‘চাঁদের অমাবস্যা’। কথাসাহিত্যিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর একই নামের কালজয়ী উপন্যাস অবলম্বনে বানানো হয়েছে সিনেমাটি। ইতিমধ্যেই সিনেমাটির পোস্টার প্রকাশিত হয়েছে। সিনেমটি মুক্তির দায়িত্ব নিয়েছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকি। এ বছরেই সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়া হবে। এরপর সেটি প্রকাশ করা হবে চরকিতে।
২০২০-২১ অর্থবছরে সরকারি অনুদানে নির্মাণ করা হয় ‘চাঁদের অমাবস্যা’। গত বছর সিনেমার কাজ শেষ করেন অঞ্জন। ওই বছরই ছবিটি মুক্তির পরিকল্পনা ছিল। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি এবং নিজের অসুস্থতার কারণে ছবি মুক্তি দিতে পারেননি তিনি।
চাঁদের অমাবস্যার বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন আসাদুজ্জামান নূর, তনয় বিশ্বাস, ইরেশ যাকের, দ্বীপান্বিতা মার্টিন, শাহানা সুমি প্রমুখ। চিত্রগ্রহণে ছিলেন ‘মাটির ময়না’ ও ‘মেঘমল্লার’ চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রাহক ভারতের সুধীর পালসানে। সম্পাদনা করেছেন সামীর আহমেদ।