জান্নাতুল ফেরদৌস, গাজীপুর
সুখের সংসার ছিল আমাদের। কিন্তু করোনায় সব এলোমেলো হয়ে গেল। বাবার উপার্জন বন্ধ। খেয়ে না খেয়ে দিন কেটেছে। ধারদেনা করে, বাড়ি বন্ধক রেখে এসএসসি পরীক্ষায় বসেছি। জিপিএ–৫ পেয়েছি ঠিক, কিন্তু আর্থিক সংকট কাটেনি। কলেজে ভর্তি হয়ে পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং ক্যাম্পেইনে কাজ করতাম। এর মধ্যে ঘাড়ে টিউমার আর সারা গায়ে চর্মরোগ ধরা পড়ল। সামনেই এইচএসসি পরীক্ষা। আমার চিকিৎসার জন্য বাধ্য হয়েই মা-বাবা বাড়িটা বিক্রি করে দেন। অসুস্থতার জন্য টিউশনিগুলো ছাড়তে হয়েছিল। ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য খণ্ডকালীন চাকরিও করিনি। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ব্যর্থ হলাম। মাস শেষে কিস্তি, বাসাভাড়া, দোকানভাড়া, ছোট বোনের পড়াশোনা, মাসিক বাজার—কত খরচ! ছোটখাটো একটা চাকরি নিয়েছিলাম। সেই চাকরি থেকে হাফ বেলা ছুটি নিয়ে, বৃষ্টিতে ভিজে কত কষ্ট করে যে এইউডব্লিউর ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছি! ভাইভার দিনও ডিউটি ছিল। অনেক ঝড়ঝাপটা পেরিয়ে আমার এইউডব্লিউতে পা রাখা। মা খুব অসুস্থ। ইচ্ছে আছে অদ্বিতীয়া বৃত্তির টাকায় মায়ের চিকিৎসা করাব।