বিএনপি আগামী জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হলে খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতি ও তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন—এটি বিএনপির দলীয় অবস্থান নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবসে বিএনপির পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন রিজভী।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমাদের কিছু কিছু নেতা ফেসবুকে বা বিভিন্ন জায়গায় বক্তব্যে বলছেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন, দেশনেত্রী বেগম জিয়া রাষ্ট্রপতি হবেন। এটি তাঁর ব্যক্তিগত অভিমত হতে পারে। কিন্তু এটি আমাদের দলের অবস্থান নয়।’
জনগণের মধ্যে আস্থা তৈরি করার জন্য একটি অবাধ, সুষ্ঠু অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আগে স্থানীয় সরকার নাকি পরে জাতীয় সরকার—এই বিতর্কে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অংশ নেওয়া উচিত নয় বলে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘বরং এই সরকারকে জনগণের ক্ষমতা জনগণকে ফিরিয়ে দিতে হবে। জনগণ নিরপেক্ষ ভোটের মাধ্যমে যে সরকার গঠন করবে তারাই নির্ধারণ করবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন বা অন্যান্য নির্বাচন কখন হবে।’
গণতন্ত্রে বিশ্বাসী একটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকলে স্থানীয় সরকারে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কোনো বিতর্ক করে জাতীয় নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার কিছুই নেই।’
২১ শে ফেব্রুয়ারিকে যেমন দুঃখের দিন, তেমনি প্রেরণা ও গৌরবের দিন বলে মনে করেন উল্লেখ করেন রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘কারণ ৫২–এর ২১ শে ফেব্রুয়ারির আন্দোলনের সোপান বেয়েই এই দেশে ছাত্র আন্দোলন, স্বাধিকার আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে আমরা জাতীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছি।’
তিনি বলেন, ‘যুগে যুগে ২১ ফেব্রুয়ারি আমাদের প্রেরণা দিয়েছে, আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছে। আমাদের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাস্তায় দাঁড়াতে সাহস জুগিয়েছে। আমরা এই পথ ধরেই ৯০–এর অর্জন তৈরি করেছি। এরশাদের মতো একজন ঘৃণ্য স্বৈরশাসকের পতন ঘটিয়েছি। এরই চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ভয়ংকর ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা যে ১৭ বছর জনগণের কাঁধের ওপর ভয়ংকর অত্যাচার করে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করেছিলেন, ২০২৪–এর ৫ আগস্ট সেই রক্তপিপাসু আওয়ামী ফ্যাসিবাদের জননী পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এগুলো সবগুলোতেই ২১ ফেব্রুয়ারি আমাদের প্রেরণা জুগিয়েছে, আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছে, আমাদের সংগ্রামের মধ্যে শামিল করেছে।’
তিনি ২১–এর চেতনা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘যদি আবার কখনো কোনো ফ্যাসিজমের উত্থান ঘটে, কোনো স্বৈরশাসকের উত্থান ঘটে, ২১ ফেব্রুয়ারি আমাদের দামাল ছেলেদের দেশের জনগণকে রাজপথে নেমে লড়াই করতে উদ্বুদ্ধ করবে।’