ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি ও পাচারের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার দুদকের সহকারী পরিচালক রুহুল হক ও তানজির আহমেদের নেতৃত্বে
সংস্থাটির একটি এনফোর্সমেন্ট টিম বনানীতে নগদ অফিসে অভিযান পরিচালনা করে।
দুদক কর্মকর্তা তানজির আহমেদ বলেন, ‘আমরা নগদ অফিসে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন নথিপত্র সংগ্রহ করেছি। যাচাই-বাছাই করে বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করব।’
অভিযানের বিষয়ে নগদের প্রশাসক মোহাম্মদ বদিউজ্জামান দিদার গণমাধ্যমকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা পাচার এবং ৬০০ কোটি টাকার ই-মানি সংক্রান্ত অনিয়মের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। দুদক টিম এ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র সংগ্রহ করেছে। তারা যাচাই-বাছাই করে দেখবে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর (এমএফএস) প্রায় পাঁচ হাজার অবৈধ এজেন্ট রয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে দেশের অর্থ পাচারে সহায়তা করে আসছে এসব অবৈধ এজেন্ট। গত এক বছরে প্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। সূত্র জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন, সাবেক সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, রাজি মোহাম্মদ ফকরুলসহ প্রভাবশালী চক্র এ প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিল। খোকন তাঁর স্ত্রী নূপুরের নামে ৫০০ শেয়ার নিয়েছিলেন।
দুদকের অভিযানকালে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য এবং রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, নগদ প্রায় ৬০০ কোটি টাকার বেশি অনিয়মিত ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে লেনদেন করেছে। এ ছাড়া ট্রাস্ট অ্যাকাউন্টের সঙ্গে নগদের মূল অ্যাকাউন্টের হিসাবের গরমিল পাওয়া গেছে। অভিযোগের বিষয়গুলো বিশদভাবে যাচাইয়ের নিমিত্তে টিম সংশ্লিষ্ট সব নথি সংগ্রহ করেছে।