বাংলাদেশের বিভিন্ন অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্পে মার্কিন সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি জ্যাকবসন সাক্ষাৎ করতে এলে প্রধান উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে বসবাসরত ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য সহায়তা কার্যক্রম চালু রাখার জন্য মার্কিন প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি জীবনরক্ষাকারী বিভিন্ন গবেষণায় সম্পৃক্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর’বিতেও সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার জন্য মার্কিন প্রশাসনকে ধন্যবাদ। তবে বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত স্বাস্থ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর’বির জীবন রক্ষাকারী প্রচেষ্টাসহ বাংলাদেশের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোতে সহায়তা স্থগিত করার মার্কিন সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্বেগ জানান তিনি।
এ সময় তিনি প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলের হাইতির মতো দেশগুলোতে ডায়রিয়া এবং কলেরাজনিত মৃত্যু প্রায় শূন্যে নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে আইসিডিডিআর’বির ভূমিকা তুলে ধরেন।
ড. ইউনূস বলেন, ইউএসএআইডির সঙ্গে যাই ঘটুক না কেন, পুনর্গঠন, সংস্কার এবং পুনর্গঠনের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাংলাদেশের মার্কিন সহায়তা প্রয়োজন। এটা থামানোর সময় নয়।
বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার এজেন্ডা, রোহিঙ্গা সংকট, অভিবাসন এবং দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন। তিনি একটি ঐকমত্য কমিশন গঠন এবং এর তত্ত্বাবধানে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরুর জন্য তার সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘সংস্কারগুলোর বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানোর পর, রাজনৈতিক দলগুলো সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে’।
এ সময় চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জ্যাকবসন নতুন সরকারের জন্য নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন। তিনি দেশের নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক সম্প্রতি শুরু হওয়া অপারেশন ডেভিলস হান্ট সম্পর্কেও জানতে চান।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, তিনি বাংলাদেশি সমাজে পুনর্মিলনের আহ্বান জানিয়েছেন, প্রতিশোধের চক্র ভাঙতে এবং দেশে শান্তি ও সম্প্রীতির ভিত্তি তৈরি করতে জনগণকে আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা সবাই এই দেশের সন্তান। প্রতিশোধের কোনো স্থান থাকা উচিত নয়। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো অভিযানের সময় যেকোনো মূল্যে মানবাধিকার বজায় রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ ইউ/