গুরুতর অসুস্থ ‘আমি বাংলায় গান গাই’খ্যাত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়। কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন প্রখ্যাত এই গীতিকার, সুরকার ও সংগীতশিল্পী। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রতুলের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল নয়।
গত জানুয়ারি মাসে প্রতুলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে এসএসকেএমে ভর্তি করানো হয়। সেই সময় তাঁর নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল, তাই স্নায়ু এবং নাক কান গলার (ইএনটি) বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা হয় তাঁর। প্রায় এক মাস হয়ে গেছে হাসপাতালে আছেন শিল্পী। এরই মধ্যে তাঁর অন্ত্রের অপারেশন হয়েছে। গত সপ্তাহে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, হার্ট অ্যাটাক হয়েছে গায়কের। দ্রুত তাঁকে কার্ডিওলজি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালে শিল্পীর ফুসফুসেও সংক্রমণ দেখা দেয়। দ্রুতই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নানা জটিলতার সঙ্গে অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী সংক্রমণও তৈরি হয়েছে প্রতুলের শরীরে; যা পরিস্থিতিকে আরও গুরুতর করে তুলেছে। তিনি এখন আইসিইউতে আছেন। তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি সংকটজনক। চিকিৎসকদের নিয়ে প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের জন্য একটি বিশেষ মেডিকেল বোর্ড গঠন হয়েছে।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে গত ১৫ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন তাঁকে। সে সময় হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে প্রতুল মুখোপাধ্যায় ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গেয়ে শোনান মমতাকে। শিল্পীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় রাজ্যের দুই মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন ও অরূপ বিশ্বাস শিল্পীর খোঁজ রাখছেন।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের জন্ম বাংলাদেশে। ১৯৪২ সালে বরিশালে জন্মেছিলেন তিনি। প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের অ্যালবামগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘পাথরে পাথরে নাচে আগুন’ (১৯৮৮), ‘যেতে হবে’ (১৯৯৪), ‘ওঠো হে’ (১৯৯৪), ‘কুট্টুস কাট্টুস’ (১৯৯৭), ‘স্বপ্নের ফেরিওয়ালা’ (২০০০), ‘তোমাকে দেখেছিলাম’ (২০০০), ‘স্বপনপুরে’ (২০০২), ‘অনেক নতুন বন্ধু হোক’ (২০০৪), ‘হযবরল’ (২০০৪), ‘দুই কানুর উপাখ্যান’ (২০০৫), ‘আঁধার নামে’ (২০০৭)। বাংলাদেশে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন থেকে প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের সর্বশেষ অ্যালবাম প্রকাশিত হয় ২০১১ সালের মার্চে। অ্যালবামটির নাম ‘আমি বাংলায় গান গাই’। এ ছাড়া বাংলা চলচ্চিত্র ‘গোঁসাইবাগানের ভূত’ ছবিতেও গেয়েছেন তিনি।