নীতি সুদহার কমানো হবে না। বিদ্যমান ১০ শতাংশেই অপরিবর্তিত রেখেই বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর আশা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ বেড়ে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ হবে বলে প্রাক্বলন করা হয়েছে। ডিসেম্বরে প্রথমার্ধ শেষে ঋণ প্রবাহ কমে ৭ দশমিক ৩ শতাংশে নেমেছিল।
আজ সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) জানুয়ারি-জুন সময়ের জন্য ঘোষিত নতুন মুদ্রানীতিতে সরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধি কমে সাড়ে ১৭ শতাংশে নামার আশা করা হয়েছে।
মুদ্রানীতিতে ঋণ প্রবাহ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাক্বলনে বলা হয়, জুন শেষে সরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি কমে সাড়ে ১৭ শতাংশে নামবে, ডিসেম্বর শেষে ছিল ১৮ দশমিক ১ শতাংশ।
অন্যদিকে গত জুন শেষে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি আড়াই শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ। গত ডিসেম্বর শেষে এই হার ছিল ৭ দশমিক ৩ শতাংশ।
সরকারি-বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধির নতুন লক্ষ্যমাত্রার ফলে সার্বিকভাবে অভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধি বাড়বে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সে অনুযায়ী জুনে অর্থবছর শেষে অভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধির সাড়ে ১১ শতাংশে উন্নীত হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। এই হার ডিসেম্বর শেষে ৯ দশমিক ৪ শতাংশে আছে।
দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ভোগাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে দুই বছরের বেশি সময় ধরে টানা সুদহার বাড়ানো হলেও নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধিতে। সর্বশেষ নীতি সুদহার বেড়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। এতে গ্রাহক পর্যায়ে সুদহার বেড়ে এখন ১৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে। সুদহার বেড়ে যাওয়ায় কমেছে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি।
গত ডিসেম্বরে বেসরকারি খাতে ব্যাংক ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন ৭ দশমিক ৩ শতাংশে নামে, যা ২০২১ সালের অক্টোবরের পর সর্বনিম্ন। এমন অবস্থায় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই ঋণের সুদহার আগের মত ৯ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে।
বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি নিম্নমুখিতার কারণ ব্যাখ্যা করে মুদ্রানীতির প্রতিবেদনে বলা হয়, এর জন্য শুধুমাত্র নীতি সুদহার বৃদ্ধি এককভাবে দায়ী নয়। পাশাপাশি আমানতের প্রবৃদ্ধির ধীরগতি এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে সরকারের ঋণ নেওয়াও ভূমিকা রেখেছে। এর ফলে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
তবে শিগগির আমানতে প্রবৃদ্ধি এবং সরকারি ঋণ নেওয়া কমার তেমন সম্ভাবনা নেই। ২০২৫ সালের জুন শেষে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির ৯ দশমিক ৮ শতাংশ অর্জনের আশা শেষ পর্যন্ত বাস্তবের মুখ নাও দেখতে পারে।