দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্য সংহত করতে বিএনপি, জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কসহ বিভিন্ন দল, সংগঠনের নেতাদের চায়ের দাওয়াত দিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর তোপখানার নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত বিশেষ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান মান্না।
বিএনপি ও ছাত্রদের নতুন দল গঠনের সঙ্গে যুক্ত সমন্বয়ক এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতাদেরকে চায়ের দাওয়াত দেওয়ার কথা জানিয়ে মান্না বলেন, ‘আমরা উদ্যোগ নিয়েছি বিএনপি এবং ছাত্রদের নতুন দল করবে বলে যাঁরা ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁদের একটা চায়ের দাওয়াত করছি। ছাত্র সমন্বয়ক এবং নাগরিক কমিটির নেতাদের দাওয়াত দিয়েছি। এ ছাড়া আমাদের গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা আছেন। আমাদের নৈকট্য আছে, তাঁদেরও বলব।’
মান্না আরও বলেন, ‘দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায়, যে স্লোগানটা আসছে, জাতীয় ঐক্যের। যদিও এটা দরকার। সামনে নির্বাচন, চাইলেই সব দল তো ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারবে না। হবেও না। কিন্তু গণতান্ত্রিক উত্তরণের যে প্রক্রিয়া, সেখানে ন্যূনতম ঐকমত্য লাগবে।’
বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ভালোভাবে তৈরি হয়নি জানিয়ে সাবেক এই ডাকসু ভিপি বলেন, ‘স্বাধীনতার পরপরই দেশ বিভাজনের দিকে গেছে। দরকার ছিল স্বাধীনতার পর সবকিছু সমাধান করা। কিন্তু খোদ যাঁরা শাসক ছিলেন, তাঁরাই বিভাজনটা টিকিয়ে রেখেছেন, বাড়িয়েছেন। সর্বশেষ ১৫ বছরের শাসনে এটার ওপরেই শাসক দল রাজনীতি করেছে। বিভাজনের ওপরে।’
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আপনার মনের মধ্যে একটা আদর্শ আছে বা আপনি একভাবে একটা জিনিস বোঝেন, এটাতে আপনি এত জোর দিচ্ছেন যে, এটা অন্যকে আঘাত করছে সেটা হিসাব করছেন না। এই আঘাতের ফলে আপনিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন, এটা ভাবছেন না। ভাবলে আপনি লিমিট রেখে করতেন। ভোট যখন হয় তখন এক দল অন্য দলের বিরুদ্ধে বলে না? বলে। কিন্তু আমরা এখনই সেই মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছি।’
সরকার রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না উল্লেখ করে মান্না বলেন, ‘আমরা বড় বিপদে আছি, ইউনূস সাহেব যদি রাগ করে বলেন, থাকব না আমি, চলে গেলাম। তখন সেনাবাহিনী আসবে। ওটা আরও পাঁচ বছর ধরে চলবে। সরকারের সমালোচনা করলেও বিরোধিতা করতে পারছি না।’
ভারত প্রসঙ্গে মান্না বলেন, ‘এমন একটা অবস্থা হয়েছিল যে, ভারত বোধ হয় অ্যাটাক করল। কিন্তু ভারত অ্যাটাক করার জায়গায় নেই। অস্থিতিশীলতা শুধু আমাদের আছে এমন নয়, ভারতেরও আছে। আমাদের লোকজন ওখানে যাচ্ছে না বলে নিউমার্কেট বন্ধ। হাসপাতালগুলো খাঁ খাঁ করছে। চায়না যেভাবে আগ্রহ দেখাচ্ছে, ইউনূস সাহেব যদি সিগন্যাল দেন, থাকিস ঠিকমতো, ইন্ডিয়াকে টাইট করতে হবে, তাহলে ইন্ডিয়ার অসুবিধা আছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ্ কায়সার, প্রেসিডিয়াম সদস্য জিন্নুর আহমেদ চৌধুরী দিপু, অর্থ সম্পাদক শাহনাজ হক রানু, দপ্তর সম্পাদক মহিদুজ্জামান মহিদ প্রমুখ।