ছাত্র-জনতার ওপর হামলায় জড়িতদের ধরতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গাজীপুরসহ সারাদেশে চলছে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’। এখন পর্যন্ত গাজীপুর জেলার পাঁচটি থানা থেকে ৪০ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতভর অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে গাজীপুর জেলা পুলিশ।
আজ রবিবার সকালে সাড়ে ৯টায় গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গতকাল থেকে শুরু হওয়া অপারেশন ডেভিল হান্টে আজ রবিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৪০ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা বিভিন্নভাবে ফ্যাসিস্ট সরকারের লোকজন।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে আটককৃতদের নাম-পরিচয় জানাতে পারেননি গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার।
এদিকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, বাংলাদেশসেনাবাহিনী, র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাতভর ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনা করেছে। তাদের পক্ষ থেকে এখনো আটক বা গ্রেপ্তারের তথ্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে গাজীপুরের ধীরাশ্রমের দক্ষিণখানে পতিত স্বৈরাচারের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। এ সময় সমন্বয়কসহ ২৫-৩০ জন ছাত্র ও জনতাকে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে ডেকে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
আহতদের দাবি, কৌশলে তাদের বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করিয়ে মসজিদের মাইকে ‘ডাকাতি হচ্ছে’ ঘোষণা দিয়ে হামলা চালানো হয়। মুখে মাস্ক পরে, ধারালো অস্ত্র হাতে বেশ কয়েকজনকে মারধর করে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। এতে আহত হন অন্তত ২০ জন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে সেনাবাহিনী। আহতদের পাঠানো হয় গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এ ঘটনার পর ক্ষোভে ফুঁসছে ছাত্র-জনতা। জড়িতদের দ্রুত বিচার দাবিতে শনিবার সড়কে বিক্ষোভ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগকে দ্রুত নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি হামলাকারীদের ধরতে আলটিমেটাম দিয়েছেন তারা।
এদিকে শনিবার রাতে বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে ফিরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের সড়কে অবস্থান করছিলেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। হঠাৎ শহরের জোর পুকুরপাড়ের দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলে থেকে গুলি চালানো হয়। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী মোবাশ্বের হোসেন গুলিবিদ্ধ হন। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে আনা হয়।
ভুক্তভোগীর বন্ধু জানান, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এই গুলি ছুড়েছে। জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
এম এইচ/