দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সুপারিশ করেছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। তাদের সুপারিশ অনুযায়ী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ হবে চার মাস। এ সময়ে জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচন সম্পন্ন করার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষের সদস্য এবং স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচিত প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত বৃহত্তর নির্বাচনমণ্ডলীর ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করার কথাও বলেছে কমিশন।
ড. বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন আজ শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এর আগে গত ১৫ জানুয়ারি প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ জমা দিয়েছিল কমিশন।
তবে ২৬ জানুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন কমিশনের সুপারিশের কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করে বলেন, এগুলো বাস্তবায়িত হলে ইসির ক্ষমতা খর্ব হবে। এগুলো বাস্তবায়িত হলে তাঁরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবেন না।
সিইসির আপত্তির বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে এবং শপথ ভঙ্গ করলে কমিশনারদের মেয়াদ পরবর্তী সময়ে উত্থাপিত অভিযোগ প্রস্তাবিত সংসদীয় কমিটি তদন্ত করে সুপারিশসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর বিধান করা; ভবিষ্যতে সীমানা নির্ধারণের জন্য একটি আলাদা স্বাধীন সীমানা নির্ধারণ কমিশন গঠন করা; জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিবর্তে ‘জাতীয় নাগরিক ডেটা কমিশন’ নামের একটি স্বতন্ত্র স্বাধীন সংবিধিবদ্ধ সংস্থা গঠন করা ইত্যাদি।
শনিবার কমিশনের জমা দেওয়া পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে এ বিষয়গুলো আছে। এ ছাড়া সংসদে ৪০ শতাংশ ভোট না পড়লে পুনর্নির্বাচন ও না ভোটের বিধান যুক্ত করার সুপারিশও করেছে কমিশন।
এর বাইরে বিরোধী দলকে ডেপুটি স্পিকারের পদ দেওয়া; ভোটারপ্রতি ১০ টাকা হিসাবে নির্বাচনী ব্যয় নির্ধারণ করা; গণভোটের বিধান কার্যকর করা; উচ্চকক্ষের ১০০ আসনের মধ্যে প্রতি দলের ৫০ শতাংশ সদস্য এবং বাকি ৫০ শতাংশ নির্দলীয় ভিত্তিতে নাগরিক সমাজ, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, মানবসেবা প্রদানকারী, শ্রমজীবীদের প্রতিনিধি, নারী উন্নয়নকর্মী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্য থেকে সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচিত করা; দলীয় ও নির্বাচিতদের মধ্যে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ নারীর অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন সুপারিশ করেছে কমিশন।