Homeলাইফস্টাইলকমলা নাকি হলুদ কোন রঙের ডিমের কুসুম স্বাস্থ্যকর

কমলা নাকি হলুদ কোন রঙের ডিমের কুসুম স্বাস্থ্যকর


ডিম নিয়ে বিতর্কের যেন শেষ নেই। ‘মুরগি নাকি ডিম’ কোনটি আগে— এ বিতর্ক দিয়ে সম্ভবত শুরু। তারপর দিনে কতটি ডিম খাওয়া যাবে আর কতটি খাওয়া যাবে না, সে বিতর্ক আছে। সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে, কমলা নাকি হলুদ কোন রঙের ডিমের কুসুম স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, সে বিতর্ক।

ডিম ভাঙলে কখনো দেখা যায় হলুদ আবার কখনো কমলা রঙের কুসুম। এটি মূলত নির্ধারিত হয় মুরগির খাবার এবং তাদের জীবনযাত্রার ওপর। সাধারণভাবে, কমলা কুসুমকে বেশি পুষ্টিকর বলে মনে করা হয়। তবে সব ধরনের ডিমই পুষ্টিকর। তাই যদি পুষ্টির উদ্দেশে ডিম খাওয়া হয় তাহলে কুসুমের রং দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়।

কুসুমের রং যেভাবে পরিবর্তিত হয়

সাধারণত উজ্জ্বল কমলা কুসুম দেখলে বোঝা যায় মুরগিটি পুষ্টিকর খাবার খাচ্ছে। মুরগি যদি উন্মুক্ত থাকে অর্থাৎ মাঠে ঘুরে বেড়ায় এবং প্রাকৃতিক খাবার খায়, তাহলে তাদের ডিমের কুসুমের রং আরও কমলা হয়। এর বিপরীতে যেসব মুরগি খামারের শেডে সীমিত জায়গায় বেড়ে ওঠে এবং কৃত্রিম খাদ্য খায় তাদের ডিমের কুসুমের রং হয় হলুদ বা হালকা হলুদ।

হলুদ কুসুমের ডিমের বৈশিষ্ট্য

হলুদ কুসুম সাধারণত মুরগির খাবারের কারণে হয়। যে সব মুরগির খাদ্যতালিকায় কর্ন ও সয়া থাকে তাদের কুসুম হলুদ বা হালকা হয়। এই ধরনের ডিমে কম পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ই এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। মুরগির মুক্ত পরিবেশে চলাফেরা করার সুযোগ থাকে না এমন ফার্ম থেকে আসে এসব ডিম। এই মুরগিগুলো একঘেয়ে কৃত্রিম খাবার খেয়ে থাকে। এর ফলে তাদের কুসুমের রং হালকা হয়ে যায়।

কমলা কুসুমের ডিমের বৈশিষ্ট্য

সাধারণত প্রাকৃতিক ও পুষ্টিকর খাবার খায় এবং উন্মুক্ত প্রান্তরে ঘুরে বেড়ানো মুরগি থেকে কমলা কুসুমের ডিম পাওয়া যায়। এ ধরনের ডিমে বেশি পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড বেশি থাকে। এসব ডিম স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। বাজারে এখন অনেক পণ্যের মধ্যে এমন ডিমের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ মানুষ মনে করে, কমলা কুসুম বেশি পুষ্টিকর।

কমলা কুসুম কি সত্যিই স্বাস্থ্যকর?

অনেকেই বিশ্বাস করেন, কমলা কুসুমের ডিম বেশি পুষ্টিকর। তবে গবেষণা জানাচ্ছে, কুসুমের রং সব সময় পুষ্টির মান নির্ধারণ করে না। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মুরগি ক্যারোটিনয়েড সমৃদ্ধ খাবার খায় তাদের ডিমের কুসুম কমলা রং ধারণ করে। তবে, সব ধরনের ডিমই ভিটামিন, প্রোটিন, মিনারেল এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। তাই কুসুমের রঙের ভিত্তিতে পুষ্টির মানের পার্থক্য করা ঠিক নয়।

মুরগি কী খায় এবং কেমন পরিবেশে থাকে তার ওপর নির্ভর করে তৈরি হয় তার ডিমের কুসুমের রং। ছবি: ফ্রিপিক

মুরগি কী খায় এবং কেমন পরিবেশে থাকে তার ওপর নির্ভর করে তৈরি হয় তার ডিমের কুসুমের রং। ছবি: ফ্রিপিক

পুষ্টির যে দিকগুলো গুরুত্বপূর্ণ

প্রতিটি ডিমই পুষ্টিতে সমৃদ্ধ। এগুলোতে প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি, ভিটামিন এ, ডি, ই, কে এবং বি কমপ্লেক্স থাকে। এ ছাড়া ডিমে থাকে ক্যালসিয়াম, লোহা, সেলেনিয়াম, জিংক, ফসফরাস এবং জোলাইন। মুরগির খাবার এবং কেমন পরিবেশে তারা থাকে তার ওপর ভিত্তি করে ডিমে এসব পুষ্টির পরিমাণে কিছুটা ভিন্নতা আসতে পারে।

যদি আপনি সবচেয়ে পুষ্টিকর ডিম খেতে চান, তাহলে শুধু কুসুমের রং দেখে নয়, মুরগির খাদ্য, ডিমের আকার এবং খামারের পরিবেশও লক্ষ্য করা উচিত। যদি মুরগির খাবারে ফ্ল্যাক্সসিড, মাছের তেল বা আলগী দেওয়া হয় তাহলে তাদের ডিমে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়তে পারে। তবে, মনে রাখতে হবে যে, ডিমের তুলনায় অন্য উৎস থেকে ওমেগা-৩ নেওয়া আরও বেশি কার্যকর।

সুতরাং, আপনি যে ডিমই খান, সেটা একদম স্বাস্থ্যকর। কুসুমের রং বা ডিমের আকার দেখে পুষ্টির মান বিচার না করে, বরং মুরগির জীবনযাত্রা এবং খাদ্যাভ্যাস অনুসন্ধান করা ভালো। খাদ্যাভ্যাসে বৈচিত্র্য থাকলে ডিমের পুষ্টি আরও বাড়ানো সম্ভব। তাই সুস্থ থাকতে প্রতিদিন যথেষ্ট ডিম খাওয়া নিশ্চিত করুন। তাতে আপনার শরীর অনেক পুষ্টি পাবে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত