বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার উসকানির ফাঁদে জড়িয়ে পড়লে অনভিপ্রেত অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে একদিকে বহুমুখী ষড়যন্ত্রের শক্তি শক্তিশালী হবে, আর অন্যদিকে গণঅভ্যুত্থানের অর্জন হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও বাড়বে।’
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দলটির ঢাকা মহানগর প্রতিনিধি সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম এই নেতা বলেন, ‘অরাজকতা ও নৈরাজ্য প্রতিরোধে সরকারকে জন-আস্থার পরিচয় দিতে হবে। দেশ পরিচালনায় অন্তর্বর্তী সরকারকে দক্ষতা ও যোগ্যতার পরিচয় দেওয়া প্রয়োজন।’
তিনি সতর্ক করেন, শেখ হাসিনার উসকানিতে জড়িয়ে পড়লে গণঅভ্যুত্থানের অর্জন হাত ছাড়া হয়ে যেতে পারে।
সাইফুল হক মনে করেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে জন-আস্থার মর্যাদা দিতে হবে। সরকার হিসেবে তারা দুর্বল ও অকার্যকর— এমন ধারণা বাড়তে থাকলে তাদের সফল হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।’
‘অরাজকতা ও সামাজিক নৈরাজ্য প্রতিরোধে তারা যদি দৃঢ়তার পরিচয় দিতে না পারেন তাহলে রাজনৈতিক দল ও জনগণের সমর্থন থাকা স্বত্বেও তারা গণতান্ত্রিক উত্তরণে নেতৃত্ব প্রদানে ব্যর্থ হবেন’, বলেন তিনি।
সাইফুল হক মনে করেন, গত দুই দিনে ঢাকাসহ দেশব্যাপী সংগঠিত অরাজক পরিস্থিতিতে এই ধারণা আরও প্রবল হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে দেশ পরিচালনায় দক্ষতা ও যোগ্যতার পরিচয় দিতে হবে।
তিনি বলেন, পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যে ছাত্র শ্রমিক জনতার গণহত্যা ও তার ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের আমলে সংঘটিত অপরাধের জন্য ক্ষমা চাওয়া দূরের কথা কোনও অনুশোচনা পর্যন্ত নেই। বরং তার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি প্রকারান্তরে উসকানি সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন।
সাইফুল হক বলেন, ‘পতিত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শক্তির উসকানি ও নাশকতা সৃষ্টির অপতৎপরতা মোকাবিলায় ছাত্র-জনতা ফ্যাসিস্টদের পথ অনুসরণ করতে পারে না। এই ধরনের কর্মকাণ্ড একদিকে সামাজিক নৈরাজ্যেরই বিস্তার ঘটাবে, আর অন্যদিকে গণঅভ্যুত্থানের অংশীজন ও জনগণের মধ্যে ঐক্যের পরিবর্তে আরও বিভক্তি ও বিভাজন তৈরি করবে।’
পার্টির ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় আরও বক্তব্য রাখেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, মো. সালাউদ্দিন মিয়া, মীর রেজাউল আলম, অ্যাডভোকেট ফায়েজুর রহমান মনির, বাবর চৌধুরী, জামাল সিকদার হোসেন খান, রাজেস খান, মোহাম্মদ মিলন, জামিলুর রহমান ডালিম, আরিফুল ইসলাম ও সাজ্জাদুল করিম আলভী প্রমুখ।
সভায় আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পার্টির ঢাকা মহানগর কমিটির সমাবেশ সফল করতে সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়।