নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের দাদার বাড়ি ও আওয়ামী লীগের জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত ‘বায়তুল আমান ভবন’ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভাঙচুরের আগে ভবনটিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে শহরের চাষাঢ়া মোড়ে এই ভবনটি ভেকু দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। স্লোগানে স্লোগানে বলেন, ‘শামীম ওসমানের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’। আর উৎসুক জনতা মোবাইলে সেই ভাঙার দৃশ্য ধারণ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের এ শহরে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর ও সন্ত্রাসী শামীম ওসমানের চিহ্ন থাকবে না। তাদের সব চিহ্ন ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে, যাতে এই বাংলায় আর কোনও স্বৈরাচারের উত্থান না হয়।
বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের মধ্যে আবির হোসেন জানান, আওয়ামী লীগ যখনই মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করবে, আমরা তাদের প্রতিহত করবো। বুধবার স্বৈরাচার শেখ হাসিনা অনলাইনে বক্তব্য দিয়েছেন। এর জবাবে আমরা ছাত্র-জনতা মিলে দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী স্বৈরাচারদের স্থাপনা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছি। আজ শামীম ওসমানের পৈতৃক বাড়ি আমান ভবনও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোনের নারায়ণগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক নিরব রায়হান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমি একটা মিটিংয়ে আছি। আমান ভবন ভাঙচুরের বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে আমাদের বৈষম্যবিরোধী কমিটির পক্ষ থেকে কেউ এটা করেনি। কে বা কারা এটা করেছে তা খবর নিয়ে বলতে পারবো।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিএনপির কেউ ভবন ভাঙচুর করেনি। এটা কারা করেছে তা জানা নেই।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ভবনটি জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়েছিল। এই অবস্থায় এখানে কেউ বসবাস করতো না। তবে সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের দাদা এম ওসমান আলী ওরফে খান সাহেব ওসমান আলী একসময় এই বাড়িতে বসবাস করতেন। এই ভবনের মালিক খান সাহেব ওসমান আলী থেকে শুরু করে তার ছেলে এ কে এম শামসুজ্জোহা, তার তিন ছেলে মরহুম একেএম নাসিম ওসমান, একেএম সেলিম ওসমান ও একেএম শামীম ওসমান আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব দিয়েছেন। এর জের ধরে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাইতুল আমান ভাঙচুর করা হয়েছিল, তবে ধসিয়ে দেওয়া হয়নি। এবার একেবারেই ধসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও জানা গেছে, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল শহরের চাষাড়া এলাকার এই বায়তুল আমান থেকে। আর এই ভবনে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল বলে পার্টির নেতাকর্মীরা দাবি করে আসছেন। তবে ওসমান পরিবারের প্রতিদ্বন্দ্বী ও আওয়ামী লীগের আরেকটি অংশ এ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিল।