ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লাইভে বক্তব্য দেওয়ার ঘোষণা নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে বাংলাদেশেকে ‘ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি’ মুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
আজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এমন মন্তব্য করেন। পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখেছেন, ‘আজ রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে।’
জানা যায়, রাতে ছাত্রসমাজের উদ্দেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে পালানো সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্টরা ঘোষণা দিয়েছেন, ঠিক যে সময়ে শেখ হাসিনা বক্তব্য দেয়া শুরু করবেন, তখনই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ভবনে ভাঙচুর চালানো হবে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
আজ বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় ছাত্র সমাজের উদ্দেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।
হাসনাত আবদুল্লাহর পোস্টের কমেন্টে মাশুকুর রহমান মায়েদ নামের এক আইডি থেকে কমেন্ট করা হয়েছে, ‘আজ রাত ৯ টায় ৩২ এর ১২টা বাজাবে ৩৬ এর জনতা।’
মো. সাজিদ এক আইডি থেকে কমেন্ট করা হয়েছে, ‘ধানমন্ডি ৩২-এ তোমরা প্রস্তুত তো! আমরা ছাত্র-জনতা আসতেছি ইনশাল্লাহ। লংমার্চ টু ধানমন্ডি ৩২… মুজিববাদ মুর্দাবাদ…ধুলোয় মেশাও তাড়াতাড়ি, ৩২ এর দালানবাড়ি।’
তিলোত্তমা পানকৌড়ি নামের এক ফেসবুক আইডি থেকে লিখা হয়েছে, ‘এত ডর করে তোমার পুড়ে ছাই হওয়া একটা বাড়ি কে! ডরপোকদের দিয়ে রাজনীতি হয় না জানো তো?’
এর আগে আজ বুধবার রাজধানীর বাংলামোটরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগ প্রসঙ্গ এ দেশে আর নেই। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের কসাই। তাঁর কোনো ভাষণ যদি এখন কোনো গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়, তাহলে সে গণমাধ্যম শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করছে বলে ধরে নিতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বে হাসনাত বলেন, ‘৫ আগস্টের পর শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগ চ্যাপ্টার ক্লোজড। তারা যদি প্রাসঙ্গিক থাকতই, তাহলে ৫ আগস্ট পালায়ে যাইতে হইত না।’
গণমাধ্যমের উদ্দেশে হাসনাত বলেন, ‘মিডিয়ায় এখনো দেখি ভাশুরের নাম মুখে নিতে কেমন যেন লাগে। এখনো সাবেক প্রধানমন্ত্রী লেখা হয়। উনি কি সাবেক, নাকি ফ্যাসিবাদের “বুচার অব দিস মাদারল্যান্ড”? তিনি এই বাংলাদেশের বুচার (কসাই)। তিনি চেয়ার টিকিয়ে রাখতে দুই হাজার মানুষকে হত্যা করেছেন। কেন মিডিয়াতে ফ্যাসিবাদী খুনি হাসিনা লেখা হয় না? ফ্যাসিবাদী খুনি হাসিনা যদি না লেখেন বা না বলেন, আপনারা আওয়ামী কাঠামো বা মিডিয়া রয়েছে, সেটির সিলসিলা অব্যাহত রাখছেন।’