নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে উন্নতি আমরা প্রত্যাশা করি, তেমন কিছু দেখতে পারছি না। আমরা উপদেষ্টাদের নিয়ে যতটা আশা করেছিলাম সেই জায়গায় আমাদের প্রত্যাশা কিছুটা কমছে।’
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বণিক বার্তা আয়োজিত ‘খাদ্যপণ্যের যৌক্তিক দাম: বাজার তত্ত্বাবধানের কৌশল অনুসন্ধান’ শীর্ষক নীতি সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, ‘মাঝারি বা ছোট ছোট আমদানিকারকরা কোথা থেকে কী পরিমাণ আমদানি করবেন, সেটিও ঠিক করে দেন বড়রা। ফলে বাজার ব্যবস্থায় প্রতিযোগিতার বদলে সমঝোতা বা সহযোগিতা ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে কিছু সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে। এই ব্যবস্থার বদলে বাজারে প্রতিযোগিতামূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা দরকার ‘
তিনি বলেন, ‘বাজারে আগের মতোই চাঁদাবাজি চলছে, এসব চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেট আবার নিয়ন্ত্রণ করে রাজনৈতিক দলগুলো। তাই বাজার ব্যবস্থায় সুস্থ ধারা ফিরিয়ে আনতে হলে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা দরকার। দেশে যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, তাতে আমরা (ব্যবসায়ী সমাজ, নাগরিক সমাজ, উপদেষ্টা পরিষদ) যেভাবে যতটাই চাই না কেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া বাজারে সুস্থ ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা যাবে না। রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি বাজার ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত সবারই কিছু না কিছু দায় রয়েছে। আমরা দেখেছি, ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেলে নানাভাবে তাদের প্রভাব কাজে লাগান। তবে এখন সময় এসেছে, কার কী ভূমিকা ও কার কতটুকু দায়, তা নিয়ে সরাসরি কথা বলার। সেই সৎ সাহস আমাদের সবার থাকা উচিত।’
সারজিস বলেন, ‘নানা ফোরামে ভালো ভালো অনেক কথা হয়। কিন্তু আমরা সেগুলোর বাস্তবায়ন খুব একটা দেখতে পাই না। অন্তর্বর্তী সরকারে খুব ভালো ভালো মানুষ আছে, উপদেষ্টা পরিষদে আছে। তারা হয় বাংলাদেশের সবাইকে ভালো মনে করছেন, আর না হয় মনে করছেন ভালো হয়ে যাবে। কিন্তু এটা তো সম্ভব না। যুগের পর যুগ ধরে সবার রক্তে যে সংস্কৃতি মডিফাই হয়ে গিয়েছে সেগুলোকে বের করে একটা নতুন পরিবর্তিত সিস্টেম নিয়ে আসার জন্য আমাদের যে পরিমাণ কঠোর হওয়ার প্রয়োজন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে উন্নতি আমরা প্রত্যাশা করি তেমন কিছু আমরা আসলে দেখতে পারছি না। আমরা উপদেষ্টাদের নিয়ে যতটা আশা করেছিলাম সেই জায়গায় আমাদের প্রত্যাশা কিছুটা কমছে ‘
তিনি আরও বলেন, ‘লোভ দূর করে মানুষের জন্য কিছু একটা করতে হবে। কাগজের অর্থ থেকে শুরু করে সম্পদ ১০০ বছর পর নাও থাকতে পারে। চাঁদাবাজির নামে লুটপাটের ঐতিহ্য বন্ধ হওয়া উচিত। রাজনীতিবিদদের পক্ষ থেকে এই কাজটি তাদের করতে হবে।’