এক দশকেরও বেশি সময় পর ঘরের ছেলে ফিরল ঘরে! ব্রাজিলের প্রাণের তারকা নেইমার শুক্রবার সান্তোসে ফিরে পেলেন রাজকীয় অভ্যর্থনা। ২০,০০০ সমর্থকের ভালোবাসায় ভাসলেন তিনি, ঝলসে উঠল আতশবাজি, আর স্টেডিয়ামের জায়ান্ট স্ক্রিনে ফুটে উঠল লেখা ‘দ্য প্রিন্স ইজ ব্যাক!’
৩২ বছর বয়সী নেইমার সান্তোসের সঙ্গে ছয় মাসের চুক্তি করেছেন। ক্লাবটি ঘোষণা দিয়েছে, তিনি কিংবদন্তি পেলের ১০ নম্বর জার্সি পরবেন, যা তার প্রথম অধ্যায়ে ছিল না।
‘এই পবিত্র জার্সি পরার সুযোগ পাওয়া আমার জন্য বড় সম্মানের,’ এক আবেগঘন ভিডিও বার্তায় বলেছেন নেইমার।
ব্রাজিলের সাও পাওলোর বাইরে অবস্থিত ভিলা বেলমিরো স্টেডিয়ামে উৎসবমুখর পরিবেশে নেইমারকে বরণ করা হয়। ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করেও ২০,০০০ সমর্থক হাজির ছিলেন তাদের হারানো নায়ককে স্বাগত জানাতে। নেইমারের আগমনের মুহূর্তে স্টেডিয়ামে বাজানো হয় স্থানীয় শিল্পীদের গান, চারদিকে আতশবাজির আলোয় ঝলসে ওঠে আকাশ।
‘আমি খুবই খুশি। এখানে আমাদের অনেক সুন্দর মুহূর্ত কেটেছে। সামনে আরও দারুণ কিছু অপেক্ষা করছে,’ মাঠে দাঁড়িয়ে নেইমার বললেন। সমর্থকরা চিৎকার করে তাকে আবারও ড্রিবল করার আহ্বান জানালে তিনি হেসে উত্তর দেন, ‘সাহসের কোনো ঘাটতি হবে না!’
সৌদি ক্লাব আল-হিলাল সোমবার ঘোষণা দেয় যে, নেইমারের সঙ্গে তাদের চুক্তি শেষ হয়েছে। মাত্র সাত ম্যাচে একটি গোল করা ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড গত ১৮ মাসে একের পর এক চোটে জর্জরিত ছিলেন।
নেইমার নিজেই জানিয়েছেন, জানুয়ারির শুরুতেও তিনি ভাবেননি সান্তোসে ফিরবেন। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার মনে হয়, কিছু একটা ঠিক যাচ্ছে না। ‘প্রতিদিনের অনুশীলনে নিজেকে খুশি লাগছিল না,’ বললেন নেইমার। ‘তারপর যখন সান্তোসে ফেরার সুযোগ এলো, এক মুহূর্তও দেরি করিনি।’
সান্তোসে পা রেখেই নেইমার ফিরে পেয়েছেন পুরোনো অনুভূতি। ‘আমি যেন আবার ১৭-তে ফিরে গেছি,’ নেইমার বললেন হাসিমুখে।
২০০৯ সালে সান্তোসেই পেশাদার ফুটবলে অভিষেক হয়েছিল নেইমারের। এরপর চমকপ্রদ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে ২০১১ সালে দলকে কোপা লিবার্তাদোরেস শিরোপা এনে দেন। জাতীয় দলের হয়ে তিনি ১২৮ ম্যাচে করেছেন ৭৯ গোল, যা পেলের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে।
সান্তোসে ফিরেই নতুন চ্যালেঞ্জের অপেক্ষায় নেইমার। তবে এখন সবচেয়ে বড় বিষয়—নেইমার আবারও ফুটবল উপভোগ করতে চান, ঠিক সেই কিশোর বয়সের মতো!