Homeদেশের গণমাধ্যমেমোহাম্মদপুরে ঢাকা উদ্যান ও চাঁদ উদ্যানে নতুন সেনা ক্যাম্প

মোহাম্মদপুরে ঢাকা উদ্যান ও চাঁদ উদ্যানে নতুন সেনা ক্যাম্প


রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান ও চাঁদ উদ্যানে সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের অধীনে অস্থায়ী নতুন ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। রবিবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা উদ্যানে এ অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পের কার্যক্রম শুরু হয়।

সম্প্রতি মোহাম্মদপুর বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই, ডাকাতি, সন্ত্রাসীসহ কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা বেড়েছে। এতে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বেড়ে যায়। সেনাবাহিনীর নতুন এ ক্যাম্প স্থাপনের সংবাদে স্বস্তিবোধ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সেনাবাহিনী জানায়, সন্ত্রাস দমন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সেনাবাহিনীর কঠোর অবস্থান অব্যাহত থাকবে। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানানো হয়।

জানা যায়, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সেনাবাহিনীর অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প রয়েছে। মোহাম্মদপুর ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তার জন্য বছিলা এবং সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থায়ী সেনা ক্যাম্প রয়েছে। মোহাম্মদপুরে ঢাকা উদ্যান ও চাঁদ উদ্যানে আরেকটি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হলো।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার মেজর ফজলে বারী জানান, মোহম্মদপুর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযান চলমান থাকবে। প্রয়োজনে আমাদের অস্থায়ী ক্যাম্প আরও বাড়ানো হবে। কোনও অপরাধীকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। মোহাম্মদপুরবাসীদের আতঙ্কিত না হওয়ার পাশাপাশি সন্ত্রাস ও অপরাধের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান সেনাবাহিনীর এ কর্মকর্ত।

আজ রবিবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ঢাকা উদ্যান থেকে দুজন ও জেনেভা ক্যাম্প থেকে ছয় জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা ছিনতাই, ডাকাতিসহ বিভিন্ন মামলার আসামি। পরে তাদের মোহাম্মদপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।

এর আগে শনিবার (২৬ অক্টোবর) সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান, চাঁদ উদ্যান এবং নবোদয় হাউজিং থেকে ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ এবং কিশোর গ্যাংয়ের ৪৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে যৌথ বাহিনী।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে জনসাধারণের জানমাল ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বিচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ড রোধ ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে দেশব্যাপী নিরপেক্ষতা ও পেশাদারত্বের সঙ্গে কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

আইএসপিআর আরও জানায়, নিরাপত্তাহীনতায় নিমজ্জিত মোহাম্মদপুরবাসীর জীবনে স্বস্তি আনার লক্ষ্যে যৌথ বাহিনীর এ অভিযান সুপরিকল্পিতভাবে পরিচালিত হয়। এই অভিযানে মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে ৪৫ জন অপরাধীকে গ্রেফতার হয়।

ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রাপ্তির পর থেকে মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগর থানাধীন ১৫২ জন অপরাধী, ১৮টি আগ্নেয়াস্ত্র, ২৭১ রাউন্ড গোলাবারুদ, ১৭২ ধরনের বিভিন্ন দেশি-বিদেশি অস্ত্র, একটি গ্রেনেড এবং বিপুল পরিমাণ নেশাজাত দ্রব্য উদ্ধার করে সেনাবাহিনী।

সন্ত্রাস দমন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সেনাবাহিনীর কঠোর অবস্থান অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছে আইএসপিআর।

মোহাম্মদপুরে ঢাকা উদ্যান ও চাঁদ উদ্যানে নতুন সেনা ক্যাম্প

স্থানীয়রা বাসিন্দারা বলছেন, বেশ কয়েক দিন ধরেই মোহাম্মদপুরে দিনে-দুপুরে ছিনতাই-ডাকাতিতে নিরাপত্তাহীনতায় ছিলেন তারা। সন্ধ্যার পর বাইরে বের হতে ভয় পেতেন তারা।

আগস্টের পর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অবনতি হয় মোহাম্মদপুর থানা এলাকায়। দিন-দুপুরে ছুরি-চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে লুট করা নেওয়া হয় সবকিছু। এমন পরিস্থিতিতে শনিবার মধ্যরাতে মোহাম্মদপুর এলাকায় চালানো হয় যৌথ অভিযান।

সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ছিনতাই ও ডাকাতির দুটি ঘটনার সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা যায়, গত বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে মোহাম্মদপুর নবোদয় হাউজিংয়ে ভোরে বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়ার সময় এক নারীকে কয়েকজন ছিনতাইকারী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করে। পরে অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে তার ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়।

আরেক ভিডিওতে দেখা যায়, একটি মিনি সুপারশপে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কয়েকজন ডাকাতি করতে হামলা করে। দোকানিকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দোকানের টাকাপয়সা সব নিয়ে চলে যায়। ঘটনাটি শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে বছিলা এলাকা ঘটে।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অন্য আরেক ভিডিওতে দেখা যায়, শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মোহাম্মদপুর ঢাকা উদ্যানে কয়েক শ কিশোর হাতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিশাল মহড়া দেয়। এ সময় তারা রাস্তায় যাকে পায় তাকেই ভয়-ভীতি দেখায়। মহড়ায় অংশ নেওয়া সবাই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত