Homeদেশের গণমাধ্যমেআটকে আছে পাবিপ্রবির নতুন হলের সিট বরাদ্দ

আটকে আছে পাবিপ্রবির নতুন হলের সিট বরাদ্দ


পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) প্রতিষ্ঠার ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও তীব্র আবাসন সংকটে ভুগছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে মাত্র ৭১০টি আসনসমৃদ্ধ ২টি আবাসিক হল তাদের জন্য অপ্রতুল।

তবে সম্প্রতি এক হাজার আসনবিশিষ্ট নবনির্মিত একটি হলের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ায় অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের মনে আশার সঞ্চার হয়েছিল। কিন্তু হলটির নিরাপত্তা ও কাঠামোগত স্থায়িত্ব যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই সম্পন্ন না হওয়াতে প্রশাসন সিট বরাদ্দ দিতে অসম্মতি জানিয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের সংকটের সমাধান এখনো অধরা রয়ে গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছর ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পাবিপ্রবির নবনির্মিত ভবনগুলো বুঝে নিতে প্রকল্প পরিচালকের দপ্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসককে চিঠি দেওয়া হয়। ওই চিঠি পাওয়ার পর উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম আব্দুল-আওয়াল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ইউজিসি থেকে পরামর্শ দেওয়া হয় ভবনের কাজ পরিকল্পনা মাফিক হয়েছে কিনা তা যাচাইয়ের জন্য একটি অ্যাসেসমেন্ট কমিটি গঠন করে তাদের রিপোর্ট দেখে ভবনগুলো বুঝে নেওয়ার।

তারই প্রেক্ষিতে গত বছর ২২ ডিসেম্বর দেশের ৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ জন বিশেষজ্ঞ শিক্ষক নিয়ে অ্যাসেসমেন্ট কমিটি গঠন করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অ্যাসেসমেন্ট কমিটি দুই ধাপে কাজ করবেন বলে জানা যায়। প্রথম ধাপে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ভবনগুলোর ভিজুয়াল রিপোর্ট দেবেন। ভিজুয়াল রিপোর্টের পর তারা ভবনগুলোর কয়েকটা পরীক্ষা করে টেকনিক্যাল রিপোর্ট দেবেন। ইতোমধ্যে অ্যাসেসমেন্ট কমিটি তাদের কাজ শুরু করেছেন।

প্রথম ধাপের পরীক্ষার জন্য তারা গত ১৫ থেকে ১৭ জানুয়ারি ভবনগুলো পরিদর্শন করেন এবং আগামী সপ্তাহের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ভিজুয়াল রিপোর্ট দেবেন। এরপর শুরু হবে টেকনিক্যাল রিপোর্টের কাজ। টেকনিক্যাল রিপোর্টের জন্য ভবনগুলোতে দুটি টেস্ট করানো হবে। এর মধ্যে একটা হলো হ্যামার টেস্ট, অন্যটা ফ্রেও স্ক্যানার টেস্ট।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন থেকে জানা যায়, নবনির্মিত ভবনগুলোর জন্য টেকনিক্যাল যে দুটি টেস্ট করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে তা দেশের কোনো ল্যাবে করাতে প্রায় ৫০ লাখ টাকা খরচ হবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি যন্ত্র ক্রয় করে নিজস্ব জনবল দিয়ে এই টেস্টগুলো করেন তাহলে ২০ লাখের মধ্যেই করতে পারবেন এবং এই যন্ত্রপাতি পরবর্তীতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ তাদের ল্যাবে ব্যবহার করতে পারবে। যন্ত্রের স্পেসিফিকেশন ইতোমধ্যে সিলেক্ট করা হয়েছে এবং কয়েকদিনের মধ্যেই এই যন্ত্র ক্রয় নিয়ে টেন্ডার হবে। এরপর যন্ত্র আসলে ভবনগুলোর টেস্টের কাজ শুরু হবে। টেস্টগুলো শেষ হলে অ্যাসেসমেন্ট কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে টেকনিক্যাল রিপোর্ট দেবেন। রিপোর্টের ফলাফল পজিটিভ হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে আবাসিক হলসহ অ্যাকাডেমিক ভবনগুলো খুলে দেওয়া হবে।

আরও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অ্যাসেসমেন্ট কমিটি আসার এক দিন পূর্বে অর্থাৎ ১৪ জানুয়ারি প্রকল্প পরিচালক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছুটি না নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করেছেন। এমনি এক সপ্তাহের বেশি সময় পার হলেও তিনি এখনও ক্যাম্পাসে ফেরেননি।

চলমান প্রকল্পে কাজের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে পাবিপ্রবির প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জিএম আজিজুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও ফোন বন্ধ ছিল।

আবাসিক হলসহ অন্যান্য ভবনগুলো চালু করতে সময় নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম আব্দুল-আওয়াল বলেন, আমাদের প্রথম প্রায়োরিটি আমাদের শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তা। ছাত্রদের ১০ তলা আবাসিক হলে ইমারজেন্সি এক্সিট ও ফায়ার সেফটি প্ল্যান নাই। দৃশ্যমান অবস্থায় আমরা এই সমস্যাগুলো দেখছি। টেকনিক্যাল রিপোর্টের টেস্টগুলো শেষ হওয়ার পর হয়ত আরও কিছু সমস্যা চিহ্নিত হতে পারে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে নতুন হল ও ভবনগুলো তাদের উঠিয়ে দিয়ে আমরা তাদেরকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে চাচ্ছি না।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত