Homeদেশের গণমাধ্যমেআপিল আবেদনের অনুমতি পেলো চ্যানেল ওয়ান

আপিল আবেদনের অনুমতি পেলো চ্যানেল ওয়ান


সরকারি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল ‘চ্যানেল ওয়ান’ বন্ধ করে দেওয়া নোটিশ বাতিল চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিলের অনুমোদন দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। ফলে বন্ধ করে দেওয়া চ্যানেলটি আবার চালু করার উদ্যোগ নিতে দায়ের করা মামলাটি সচল হতে যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ জন হিসেবে পরিচিত ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন মামুনের মালিকানাধীন চ্যানেল ওয়ানের পক্ষে করা আবেদন শুনানি নিয়ে রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের বিষয়ে অনুমোদন দেন চেম্বার জজ আদালত। এখন এই বিষয়ে আপিল আবেদন ফাইল করা হবে বলে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন চ্যানেল ওয়ানের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ।

আদালতে আজ চ্যানেল ওয়ানের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট পলাশ চন্দ্র রায়, অ্যাডভোকেট কাজী আখতার হোসেন, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ ও ব্যারিস্টার মারুফ ইব্রাহিম (আকাশ)। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে চ্যানেল ওয়ানের লিগ্যাল অফিসার মিজান-উল হক ছিলেন।

তিনি জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চ্যানেল ওয়ান বন্ধ করে নোটিশ দিয়েছিলেন। ওই নোটিশ চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে রিটটি খারিজ করে দেওয়া হয়। দীর্ঘ দিন চ্যানেলের মালিক ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন মামুন কারাগারে থাকায় আপিল আবেদন দায়ের করতে পারেননি। কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি আপিল আবেদন করার প্রস্তুতি নেন এবং আপিল করার পর শুনানি নিয়ে চ্যানেলটি চালুর উদ্যোগ নিবেন।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালের ২৭ এপ্রিল চ্যানেল ওয়ানের সম্প্রচার বন্ধ করেছিল। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) চ্যানেল ওয়ানের ফ্রিকোয়েন্সি বরাদ্দ বন্ধ করার পর টিভি চ্যানেলটির কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে,আবেদনটি খারিজ হয়ে যায়। সেসময় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, অনুমতি না নিয়ে চ্যানেল ওয়ান কর্তৃপক্ষ আমদানি করা সম্প্রচার যন্ত্রপাতি বিক্রি করেছে। আর সেজন্য চ্যানেলটি বন্ধ করা হয়েছে।

চ্যানেল ওয়ান ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন মামুনের মালিকানাধীন। তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন হয়রানিমূলক মামলায় কারাগারে ছিলেন। সরকার পতনের পর দীর্ঘ কারাভোগ শেষে সম্প্রতি জেল থেকে মুক্তি পান মামুন।

টেলিভিশন চ্যানেল ওয়ান বন্ধ করার সময় তৎকালীন সরকারের প্রক্রিয়া
২০১০ সালে সন্ধ্যা ৬টা ৪১ মিনিটে বিটিআরসি কর্মকর্তারা চ্যানেলটির গুলশান অফিসে গিয়ে সম্প্রচার বন্ধ করে দেন।

এতে সেখানে কর্মরত ৪০০ সাংবাদিক, কর্মচারী ও কলাকুশলী বেকার হয়ে পড়েছেন। বন্ধের কারণ হিসেবে তৎকালীন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু বলেন, টেলিযোগাযোগ আইন লঙ্ঘন করে চ্যানেল ওয়ান তাদের সম্প্রচার যন্ত্রপাতি ব্যাংকে বন্ধক রেখে পরবর্তীকালে সেগুলো নিলামে বিক্রি করে দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে চ্যানেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেছেন, ভিন্নমত দলন ও কণ্ঠরোধের অংশ হিসেবে চ্যানেলটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তখন বলা হচ্ছিল বেশ কিছুদিন ধরে চ্যানেলের সংবাদ ও টকশো’র ব্যাপারে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল বলেও জানা গেছে। শেষ পর্যন্ত সরকারের রোষানলে পড়ে টিভি পর্দা থেকে হারিয়ে গেল চ্যানেলটি। চ্যানেলের অন্যতম পরিচালক মাজেদুল ইসলাম বলেছিলেন, তারা এখন আইনের আশ্রয় নেবেন।

‘প্রিয় দর্শক সম্ভাবনার কথা বলে’— এ স্লোগানে আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে ২০০৬ সালের ২৪ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করে স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল ওয়ান। দীর্ঘপথ পরিক্রমায় এরই মধ্যে দেশবিদেশে দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠে চ্যানেলটি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, ‘বিটিআরসির নির্দেশে এখন থেকে চ্যানেল ওয়ানের সম্প্রচার সাময়িকভাবে বন্ধ হচ্ছে। এজন্য চ্যানেল ওয়ানের সব দর্শক, কেবল অপারেটর, কলাকুশলী ও বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আশা করি খুব শিগগির আমরা আবারও আমাদের সংবাদ এবং অনুষ্ঠান নিয়ে ফিরে আসব আপনাদের মধ্যে।’

এফএইচ/এমএএইচ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।



Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত