পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, “মানুষের বাঁচার জন্য প্রয়োজন নির্মল বাতাস, পানি ও মাটি। শুধু চকচকে বাড়ি বা বিলাসবহুল গাড়ি দিয়ে টিকে থাকা সম্ভব নয়। যদিও বাংলাদেশের বাতাস দূষিত এবং নদীগুলো দূষণের শিকার, তবু পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু করতে এখনো দেরি করা ঠিক নয়। পরিবর্তন শুরু করতে হবে আমাদের প্রত্যেকের থেকেই। বাজারে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ কেন আছে সেটা না ভেবে ভাবুন, আপনি কেন এখনো তা ব্যবহার করছেন। এসব একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক শত শত বছর ধরে নষ্ট হয় না এবং মাইক্রোপ্লাস্টিক হয়ে খাদ্য শৃঙ্খলে প্রবেশ করে আমাদের ক্ষতি করে।”
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)-তে প্রথমবারের মতো আয়োজিত স্টেটসন আন্তর্জাতিক পরিবেশ মুট কোর্ট প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে দেশের ৩৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
অপ্রয়োজনীয় হর্ন বাজানো বন্ধ করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, “ঢাকার মতো ব্যস্ত শহরেও মনোযোগী হলে হর্ন না বাজিয়েও গাড়ি চালানো সম্ভব।”
তিনি আরো বলেন, “আজকের পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নতুন প্রজন্মকে তাদের পূর্বসূরীদের ভুল পুনরাবৃত্তি না করে প্রকৃতির প্রতি সম্মান দেখাতে হবে এবং উন্নয়ন মডেলগুলো পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পুনর্গঠন করতে হবে।”
অনুষ্ঠানে নারী-পুরুষ সমান অংশগ্রহণ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “আমি আনন্দিত যে এখানে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে লিঙ্গ সমতা বজায় রাখা হয়েছে। এই প্রতিযোগিতা আপনাদের আরো সুযোগ অন্বেষণে উদ্বুদ্ধ করবে এবং ভবিষ্যতের পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত হতে সহায়তা করবে।”
পরিবেশগত আইনজীবীদের ভূমিকা সম্পর্কে তিনি বলেন, “পরিবেশ আইনজীবীরা শুধু আইনি কাজই করেন না, তারা কমিউনিটির সঙ্গেও যুক্ত থাকেন এবং সমাজের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখেন। এমন আয়োজন তরুণদের আইনের দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীলতার শিক্ষা দেয়।”
অনুষ্ঠানে তিনি তরুণ প্রজন্মকে টেকসই উন্নয়ন ও পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের উপাচার্য ম তামিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ইউনিভার্সিটির স্কুল অব ল এর অ্যাডভাইজর বোরহান উদ্দিন খান, ল অনুষদের ডিন নাজমুজ্জামান ভূইয়া এবং হার্টথ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক পরব নাসের সিদ্দিক প্রমুখ।