ভারতে উপোসের সংস্কৃতি নতুন কিছু নয়। ধর্মীয়, সামাজিক এবং স্বাস্থ্যগত নানা কারণে উপোস ভারতীয় সংস্কৃতির গভীরে প্রোথিত। আজকের যুগে, বিশেষত ওজন কমানো এবং ফিটনেসের ক্ষেত্রে, উপোসের আধুনিক ধারণা ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ উল্লেখযোগ্য জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বলিউডের তারকারা থেকে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত অনেকেই এই পদ্ধতিকে সহজ সমাধান হিসেবে বেছে নিচ্ছেন।
ভারতের উপোসের ঐতিহ্য এবং ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের মধ্যে বেশ মিল রয়েছে। যেমন রমজানের রোজা বা শিবরাত্রির ব্রত। উপোসে একটি নির্দিষ্ট সময় খাওয়া বন্ধ রেখে, পরে নির্দিষ্ট সময়ে আহার গ্রহণ করা হয়। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংও অনুরূপভাবে কাজ করে। কেউ ১৬ ঘণ্টা উপোস করেন, কেউ ২০ ঘণ্টা, এমনকি সপ্তাহে দু’দিন টানা ২৪ ঘণ্টা উপোসও করেন।
ফিটনেস বিশেষজ্ঞ বিনোদ চান্না বলছেন, উপোসের এই অভ্যাস ভারতীয়দের জন্য সহজ কারণ এটি তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গেই মিশে আছে। তাই ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং গ্রহণ করতে তাদের কোনো বাড়তি ঝামেলা হয় না।
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং কেন জনপ্রিয়?
সহজ পদ্ধতি: নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলা সহজ বলে এটি অনেকের কাছে আকর্ষণীয়।
ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ: খাওয়ার সময় সীমিত থাকায় সহজেই ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
মেদ ঝরানোর বিশ্বাস: অনেকেই মনে করেন, উপোসের ফলে শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত মেদ ঝরে যায়।
তবে বিনোদ চান্না সতর্ক করেছেন, নিয়ম না মেনে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করলে তা ক্ষতিকর হতে পারে। দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকলে শরীরে পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। যাদের বিশেষ স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে, তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত।
উপোস ভারতের বিভিন্ন ধর্মীয় এবং সামাজিক রীতিনীতির অংশ। এটি শুধু আধ্যাত্মিকতা নয়, স্বাস্থ্যের জন্যও কার্যকর হতে পারে। তবে আধুনিক জীবনযাত্রায় এর গ্রহণযোগ্যতা নতুন করে বাড়ছে। সহজপন্থা এবং শরীর সুস্থ রাখার জন্য এটি একটি কার্যকর বিকল্প হয়ে উঠেছে।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা