প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর দ্বিতীয় বিয়ে এবং প্রথম স্ত্রী থাকা অবস্থায় আরও একাধিক বিয়ের ওপর ঢাকা এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন যে কর আরোপ করেছিল তা বাতিল করেছে সরকার।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘বিবাহ সম্পাদনে আরোপিত একটা কর ছিল। মন্ত্রণালয় এই অযৌক্তি কর আরোপ বাতিল করেছে।’
বিয়ের কোন কর বাতিল করা হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে তা জানাননি আইন উপদেষ্টা। তবে আইন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় মানুষের জন্য ২০১৬ সালে এই কর আরোপ করা হয়।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আদর্শ কর তফসিল ২০১৬ এর ১০ (৪) এবং মিউনিসিপাল করপোরেশন (ট্যাক্সেশন) আইন ১৯৮৬ এর ৫০ ধারা অনুযায়ী এই কর আদায়ের ঘোষণাও দিয়েছিল।
ওই কর তফিসিল অনুযায়ী, প্রথম বিয়ে বা প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর আবারও বিয়ে করার জন্য বরকে ১০০ টাকা কর দিতে হবে। প্রথম স্ত্রীর জীবদ্দশায় দ্বিতীয় বিয়ের জন্য বরকে ৫ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর জীবদ্দশায় তৃতীয় বিয়ের জন্য ২০ হাজার টাকা কর দিতে হবে। আর চতুর্থ বিয়ের জন্য বরকে কর হিসেবে দিতে হবে ৫০ হাজার টাকা।
তবে স্ত্রী মানসিক ভারসাম্যহীন হলে বা সন্তানহীন হলে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না। সেক্ষেত্রে পরবর্তী বিয়ের জন্য বরকে ২০০ টাকা কর দিতে হবে। এর পাশাপাশি প্রতিটি সন্তান দত্তক নেওয়ার ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা হারে কর দিতে হবে।
বিয়ের কর বাতিলের সিদ্ধান্ত কবে থেকে কার্যকর হবে, একজন সাংবাদিকের এই প্রশ্নে আইন উপদেষ্টা বলেন, বিয়ের ট্যাক্সে আজকে (মঙ্গলবার) সাইন করলাম। আপনি ট্যাক্স ছাড়া বিয়ে করতে পারবেন।
আসিফ নজরুল বলেন, বিয়ের ফরমে লেখা থাকতো বিবাহিতা নাকি কুমারী। এটা একটা মেয়ের জন্য অমার্যাদাকর শব্দ। সেটা আমরা অবিবাহিতা করে ফেলেছি। এমন ছোটো ছোটো অনেক কাজ করেছি। আরও অনেক কাজ করার চিন্তা আছে।
আইন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তনের পর আলেম সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে একাধিক বিয়ের ওপর কর আরোপের বিষয়ে আপত্তি আসে। এই কর বাতিলের দাবিতে আইন উপদেষ্টাকে লিখিত আবেদনও দেন তারা।
‘আলেমদের যুক্তি ছিল ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী একজন সর্বোচ্চ চারটি বিয়ে করতে পারে। সেক্ষেত্রে একাধিক বিয়ের ওপর কর আরোপ করা ইসলামের শরিয়ার পরিপন্থী।’