Homeদেশের গণমাধ্যমেপানিতে ২৪ কোটি, অনিশ্চয়তায় ২৮ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ

পানিতে ২৪ কোটি, অনিশ্চয়তায় ২৮ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ


গত ২০ বছরে মানিকগঞ্জ শহররক্ষা খালে ২৪ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করলেও এখনও ময়লার স্তূপই রয়ে গেছে খালটি। এর মধ্যে ২০২২ সালের মাঝামাঝিতে শোভাবর্ধনের কাজ শুরু হয়। গত বছরের জুনে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরে আরও এক বছর প্রকল্পের মেয়াদ ও বরাদ্দ বাড়ানো হলেও এখনো বহু কাজ বাকি। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

জানা যায়, ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত মানিকগঞ্জ পৌরসভা প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয় ১৯৯৭ সালে। তবে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও মেলেনি কাঙ্ক্ষিত নাগরিক সুবিধা। মানিকগঞ্জ শহরের পয়োনিষ্কাশন ও নৌপথে যোগাযোগের জন্য ব্রিটিশ আমলে খনন করা হয়েছিল ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ খাল। কালীগঙ্গা নদীর সঙ্গে যুক্ত এ খাল দিয়ে সহজেই পণ্য পরিবহন করা যেত। পরবর্তী সময়ে গুরুত্ব হারালে কর্তৃপক্ষও আর এটির দিকে নজর দেয়নি। ফলে ময়লার ভাগাড়, দখল-দূষণে এখন প্রায় মরে গেছে খালটি। যদিও স্থানীয়দের দাবির মুখে খালটির সংস্কার ও সৌন্দর্য বর্ধনে দু’বারে সোয়া ২৪ কোটি টাকা খরচ করে পৌর কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ রয়েছে, তাতেও কোনো সুফল আসেনি।

পৌরসভা কার্যালয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালে শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে খালটি সংস্কার করা হয়। ব্লক দিয়ে সাজানো হয় খালের দুই পাশ। নির্মাণ করা হয় হাঁটার রাস্তা। তবে পৌর কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় বছর ঘুরতে না ঘুরতেই খালটির বেহাল দশা হয়। নষ্ট হয়ে যায় ব্লক ও রাস্তা।

এরপর দ্বিতীয় দফায় ২০০৮ সালে কালীগঙ্গা নদী থেকে খালের বকজুরি সেতু পর্যন্ত খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়। উচ্ছেদ করা হয় দুই পাড়ের আংশিক অবৈধ দখল। এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সহায়তায় ১৮ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার ৬৭৭ টাকা ব্যয়ে এলজিইডি ও পৌর কর্তৃপক্ষ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে। ১ হাজার ৪৪০ মিটারে পুনরায় ব্লক স্থাপন করা হয়। কিন্তু দ্বিতীয়বারের সংস্কারের ছয় মাসের মাথায় খালটি আবার ভাগাড়ে রূপ নেয়।

সর্বশেষ ২০১৬ সালের শেষের দিকে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ টাউন লেভেল কো-অর্ডিনেশন কমিটির সঙ্গে সভা করে খালটি পরিবেশবান্ধব করার জন্য পরিষ্কার করে মাছ চাষের উদ্যোগ নেয়। তাতেও মেলেনি কোনো সুফল। নতুন করে আবার খনন, শোভাবর্ধন ও দুইটি সেতু নির্মাণে ২৮ কোটি টাকা বরাদ্দে যৌথভাবে এ প্রকল্পের কাজের দায়িত্ব পায় মেসার্স অ্যাপেক্স এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স কামরুল অ্যান্ড ব্রাদারস।

মানিকগঞ্জ শহরের খালপাড়ের ব্যবসায়ী রাব্বি মিয়া বলেন, মানিকগঞ্জ শহরের একমাত্র খালটি দীর্ঘদিন যাবত সংস্কার না করায় ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। মানিকগঞ্জ পৌরসভা থেকে খালটির সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ চললেও তেমন দৃশ্যমান কাজ এখনো চোখে পড়ে না। ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ ঝিমিয়ে পড়েছে। এতে আমরা পৌরসভার বাসিন্দারা ভোগান্তিতে পড়েছি।

পানিতে ২৪ কোটি, অনিশ্চয়তায় ২৮ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ

পৌরসভার গঙ্গাধরপট্টি এলাকার রনি মোল্লা বলেন, শহরের অধিকাংশ মানুষ সব ময়লা আবর্জনা এই খালে নিয়ে ফেলেন। এতে খালটি এখন প্রায় মৃত। পৌরসভা থেকে উন্নয়ন কাজ করছে প্রায় তিন বছর ধরে। কিন্তু এখনও কাজ শেষ করতে পারছে না। এটা এখনো ময়লার ভাগাড়।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী লাভলু মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, এ পর্যন্ত আমরা প্রায় ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ করেছি। বিল পেয়েছি প্রায় ১৮ কোটি টাকা। কাজ এখনো চলমান রয়েছে।

মানিকগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক সানজিদা জিয়াসমিন জাগো নিউজকে বলেন, কাজ প্রায় শেষের দিকে। রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। খাল খননের কাজ চলমান রয়েছে। আবার নতুন করে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে সামনে মার্চ মাস পর্যন্ত।

এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।



Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত