বরিশালের দপদপিয়া সেতু দিয়ে কীর্তনখোলা নদীতে ফেলে দেয়া নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার বেলা ১২ টার দিকে সুগন্ধা নদী থেকে নবজাতকের লাশ উদ্ধার করা হয় বলে নলছিটি থানার ওসি আব্দুস সালাম জানিয়েছেন।
তিনি জানান, ঝালকাঠি নলছিটি উপজেলার কুলকাঠি ইউনিয়নের বারইকরন গ্রামে সুগন্ধা নদীতে নবজাতকের লাশ ভেসে থাকতে দেখে জেলেরা। পরে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঝালকাঠি মর্গে পাঠিয়েছেন। আনুমানিক ৫/৭ দিন পূর্বে জন্ম নেয়া নবজাতকের পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ সংগ্রহ করা হবে।
ওসি আব্দুস সালাম বলেন, কয়েকদিন পূর্বে নবজাতককে নদীতে ফেলে দেয়ার খবর পেয়েছি। সেই পরিবারকে খবর দেয়া হয়েছে। তারা এসে লাশ শনাক্ত করলে ময়না তদন্ত শেষে হস্তান্তর করা হবে।
গত ১৫ জানুয়ারী বরিশাল নগরীর দপদপিয়া সেতু থেকে কীর্তনখোলা নদীতে নবজাতকের মা তাকে ফেলে দেয়।
নবজাতকের বাবা পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার সোহেল আহমেদের অভিযোগ, পারিবারিকভাবে দেড় বছর পূর্বে তার সাথে ওই নবজাতকের মায়ের বিয়ে হয়। দূরে চাকুরি করা নিয়ে স্ত্রীর সাথে দাম্পত্য কলহ সৃষ্টি হয়। গত ১০ জানুয়ারি বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বাভাবিকভাবে কন্যা সন্তানের জন্ম দের ওই নারী। জন্ম দেয়ার পর নবজাতকের বিষয়ে উদাসীন ছিলেন তিনি। বরিশাল নগরীর আলেকান্দা এলাকায় বোনের বাসা থেকে ১৫ জানুয়ারী ওই নারী বাচ্চাকে নিয়ে পালিয়ে বের হন। পরে বাচ্চা ছাড়া বরিশাল নগরীতে বোনের বাসায় ফিরে আসেন। এরপর সে জানিয়েছে সন্তানকে কীর্তনখোলা নদীর উপর নির্মিত সেতু থেকে নিচে ফেলে দিয়েছে। এ খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস সদস্যও এবং কোতয়ালী মডেল থানার এক এসআই গিয়ে তার কাছে জানতে চেয়েছে। কিন্তু সঠিক কোন তথ্য দেয়নি।
সোমবার সকালে লাশ পাওয়ার খবর পেয়ে ছুটে এসেছেন নবজাতকের বাবা। নবজাতকের পড়নে থাকা জামা তার কিনে দেয়া। ওই জামা দেখে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন সন্তান তার। এ ঘটনায় স্ত্রী সহ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন সোহেল আহমেদ।
কোতয়ালী মডেল থানার এসআই ইব্রাহিম খলিল জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে নবজাতক সোহেল আহমেদের। তিনি প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করেছেন। তারপরেও ডিএনএর পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা হবে। এ ঘটনায় নবজাতকের বাবা অভিযোগ দিয়েছে। বরিশাল নগরীর একটি বেসরকারি মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি থাকা নবজাতকের মা কোথাও যেন যেতে না পারে সেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এ ইউ/