বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় উন্নয়নের নামে খাল খনন প্রকল্প দেখিয়ে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এই প্রকল্পটির ৭০ শতাংশ বিল নিয়েও নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে কাজ শেষ না করার অভিযোগ’সহ তথ্য পাওয়া গেছে। এতে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আলীকদম উপজেলা সদরবাসীর পানি সংকট নিরসনে বাসস্টেশন এলাকা থেকে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিনের বাড়ি ঘেষে মাতামুহুরী নদী পর্যন্ত খাল খনন প্রকল্পের কাজ শুরু করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
যেখানে প্রকল্পটির মাধ্যমে হিন্দু পাড়া, নাজির চেয়ারম্যান পাড়া, বাজার পাড়া, থানা পাড়া, আলীম উদ্দিন পাড়া, পোস্ট অফিসসহ কয়েকটি পাড়ার অন্তত ২০ হাজার মানুষের উপকৃত হওয়ার কথা থাকলেও কাজটি সম্পন্ন না করায় দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েকগুণ। এ ছাড়াও খাল খনন, ফুট ওয়াক ওয়ে ও বেঞ্চ বসানোসহ প্রকল্পটিতে ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ৭২ লাখ টাকা এবং কাজটি বাস্তবায়নের সর্বশেষ সময় সীমা দেওয়া হয়েছিল ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বান্দরবানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এনএস এন্টারপ্রাইজ।
তবে কাজটি জনবান্ধব হওয়ায় সে সুযোগকে কাজে লাগিয়ে উন্নয়নের নামে শুধুই যেন মাটি বিক্রয় করে ছিলেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। খাল খনন করে সৌন্দর্য বর্ধনে ইউনি ব্লক বসানো ও স্থানীয়দের বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে বেঞ্চ বসানোর কথা থাকলেও মাটি কাটা ছাড়া কোনো কিছুই করেনি এ সবের। এরই মধ্যে প্রকল্পের মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। বান্দরবান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সহকারী প্রকৌশলী জয় সেন ও আলীকদম উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করার ফলে কাজ শেষ না করে ৭০ শতাংশ (৫০ লাখ টাকা) বিল উত্তোলন ও মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শেষ না হওয়া নিয়ে অফিসের কোনোরূপ ভ্রুক্ষেপ নেই এবং তাদের কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদার মো. কায়ছারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এই কাজটি বাস্তবায়ন করতে বিলম্ব হয়েছে প্রকৌশলীদের অসহযোগিতার কারণে। তবে প্রকল্পটির ৯০ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ করেছেন বলে দাবি করেন। এ বিষয়টি জানতে এলজিইডি বান্দরবান জেলা অফিসের সহকারী প্রকৌশলী জয় সেন ও আলীকদম উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে আদের বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেন। বান্দরবান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সিনিয়র প্রকৌশলী পারভেজ সরোয়ার হোসেন জানান, আইপিসিপি প্রকল্পের অধীনে প্রায় ৭২ লাখ টাকার খাল খনন প্রকল্পটির প্রকল্প মেয়াদ শেষ হলেও ঠিকাদারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার সময় বাড়াতে আবেদন করেনি। এর মধ্যে ঠিকাদারকে ৫০ লাখ টাকা বিল প্রদান করা হয়েছে।