কেন এমন হলো? শ্যামলের সঙ্গে যোগ দেন গোবিন্দ দেবনাথ। তিনি তাঁতের মালিক ছিলেন। এখন মাঝেমধ্যে তাঁত চালান তিনি। তাঁর ভাষ্য, উলের দাম বেশি। সেই তুলনায় ব্যবসা জমে না। উত্তম দেবনাথ যোগ করলেন, ‘শুধু কী উলের দাম? কেনার লোকও তো নাই!’ আলোচনায় যোগ দেন বরুন দেবনাথ। তাঁর কথা সোজাসাপটা, শীত এলে সরকার ব্লেজারের কম্বল দেয়। সরকার যদি তাঁদের এই কম্বলের দিকে একটু নজর দিত, তাহলে তাঁদের কাজটা টিকে থাকত।
তাঁতিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁতিদের পুঁজির সংকট আছে, তা ছাড়া বেড়েছে উলের দাম। এ কারণে তাঁতিরা এখন আর আগের মতো কম্বল বুনছেন না। অনেক তাঁতি পরিবার জীবন-জীবিকার তাগিদে পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় সম্পৃক্ত হয়েছেন। এসব কারণে হস্তচালিত তাঁত দিন দিন কমছে। তাঁতের কাজ না থাকায় অনেকে তাঁত সরিয়ে ফেলেছেন। সেগুলো এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে।
ঘরের বারান্দায় বসে সুতা গোছাচ্ছিলেন তাঁতি বলাই চন্দ্রনাথ। সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ফুলরানী চরকা ঘোরাচ্ছেন। বলাই চন্দ্র বলেন, তাঁরা শাওয়ালহাট গিয়ে কম্বলের সুতা কিনে আনেন। যে সুতা তাঁরা দুই তিন বছর আগে প্রতি মণ ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় কিনেছিলেন, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার টাকা। কম্বল বুননে এতে খরচ বেড়ে গেছে। তবে খরচ বাড়লেও কম্বলের দাম বাড়েনি। এ কারণে কম্বল ব্যবসায় আর আগের মতো পোষায় না। আবার তাঁতিরা এখন আর আগের মতো পুঁজিও বিনিয়োগ করতে পারছেন না। গ্রামের অনেকেই তাঁত বন্ধ করে অন্য পেশায় চলে গেছেন।