Homeদেশের গণমাধ্যমেকানাডায় ট্রুডো যুগের অবসান, এরপর কী?

কানাডায় ট্রুডো যুগের অবসান, এরপর কী?


প্রায় এক দশক ধরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কানাডার নেতৃত্ব দেওয়া জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। ২০১৫ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়া ট্রুডো তার দল লিবারেল পার্টির নেতা নির্বাচিত হয়েছিলেন আরো দুই বছর আগে- ২০১৩ সালে।

কানাডার ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবার ‘ট্রুডো পরিবার’। জাস্টিনের বাবা পিয়েরে ট্রুডো প্রায় ১৫ বছর দেশটির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। বাবার রাজনৈতিক উত্তরসূরি হিসেবে জনপ্রিয়তা নিয়ে ক্ষমতায় আসা ট্রুডোর বিদায়টা রাজসিক হলো না। লিবারের পার্টির অভ্যন্তরীণ চাপ ও বিরোধীদের আনাস্থা ভোটের হুমকির মুখে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে হলো তাকে।

৫৪ বছর বয়সি জাস্টিন ট্রুডো সোমবার (৬ জানুয়ারি) পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার পর প্রশ্ন উঠেছে, এরপর কী হতে যাচ্ছে কানাডায়? কে ধরছেন দেশের হাল অর্থাৎ কে হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী? যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পইবা কী বলছেন?

বিবিসি ও রয়টার্সের সর্বশেষ খবর অনুযায়ী যা যা জানা যাচ্ছে:

আগেই জানিয়ে রাখা তারিখ অনুযাযী কানাডার রাজধানী অটোয়ায় সংবাদ সম্মেলনে এসে জাস্টিন ট্রুডো ঘোষণা দেন, তিনি পদত্যাগ করছেন। তবে লিবারেল পার্টির নতুন নেতা নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত  প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাবেন তিনি।

আগামী জাতীয় নির্বাচনে দেশ একজন যোগ্য নেতা বেছে নেবে বলে আশা প্রকাশ করে পদত্যাগের বক্তব্য শেষ করেন ট্রুডো।

কানাডার পার্লামেন্ট আগামী ২৪ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো। এই সময়ের মধ্যে বিরোধীরা চাইলেও ভোটাভুটির আয়োজন করতে পারবেন না। তবে সুযোগ পেলেই ট্রুডোর লিবারেল পার্টিকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামাতে পার্লামেন্টে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট করার হুঁশিয়ারি এসেছে।

লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে ট্রুডোর জায়গায় দুটি নাম এখন পর্যন্ত শোনা গেছে। তার মধ্যে একজন হলেন সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড এবং দ্বিতীয়জন হলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক নীতিনির্ধারণী কর্মকর্তা মার্ক কার্নি। ধারণা করা হচ্ছে, দুজনের মধ্যে ফ্রিল্যান্ডের দিকেই ট্রুডোর সমর্থন বেশি।

উদারপন্থি সাবেক প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডোর ছেলে জাস্টিন ট্রুডো। লিবারেল পার্টিকে একসময় টেনে তুলে ক্ষমতায় বসিয়েছিলেন পিয়েরে। এখন ট্রুডোর সামনেও সেই চ্যালেঞ্জ। লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে না হলেও গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারক হিসেবে দলকে সহায়তা করে সামনে এগিয়ে দেওয়া তার প্রধান কাজ হবে। সামনে ফেডারেল নির্বাচন, সেখানে তার বড় ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে।

ট্রুডোর বিরুদ্ধে বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি ও বাড়ি ভাড়া বেড়ে যাওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ নিয়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন বিরোধীরা। এখন নতুন যে নেতা আসবেন, তাকেও কানাডার এই টালমাটাল অর্থনীতি সামাল দিতে হবে।

কানাডার নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা জগমিত সিং ট্রুডোর পদত্যাগের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগই শেষ কথা নয়। তিনি বলেছেন, “সমস্যা শুধু জাস্টিন ট্রুডো নয়। প্রত্যেক মন্ত্রীকেই এই পথে যেতে হবে। প্রত্যেক লিবারেল এমপি কানাডীয়দের দিকে উঁচু নাক করে রয়েছেন, অথচ দেশের মানুষ জীবন-যাপনের উচ্চ খরচ ও বিপর্যস্ত স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে চিন্তিত। লিবারেলরা আর কোনো সুযোগের যোগ্য নন, নেতা যে-ই হোন না কেন।”

ট্রুডোর পদত্যাগের ঘোষণাকে বড় কোনো অর্জন হিসেবে দেখছেন না কানাডার বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়েরে পোলিভর।

তিনিও বলেছেন, “কিছুই পরিবর্তিত হয়নি। প্রত্যেক লিবারেল এমপি এবং নেতৃত্বের প্রতিযোগী ৯ বছর ধরে ট্রুডোর সব কিছুকে সমর্থন করে এসেছেন। এখন তারা জাস্টিনের মতো আরো চার বছর কানাডীয়দের ছিন্নভিন্ন করে রাখতে অন্য উদারপন্থি চেহারায় অদলবদল করে ভোটারদের সঙ্গে প্রতারণা করতে চান।”

এরপর তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, পার্লামেন্ট খোলামাত্রই লিবারেল সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আনবেন তারা।

পোলিভরকে কানাডার ক্ষমতায় চান ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, পিয়েরে পোলিভর কানাডার ক্ষমতায় এলে খুবই ভালো হবে। নেতা হিসেবে তিনি দারুণ।

ট্রাম্প আরও বলেছেন, পোলিভরের সঙ্গে তার রাজনৈতিক চিন্তাচেতনার মিল রয়েছে। ফলে কৌশলগত দিক থেকে তিনি ক্ষমতায় এলে একসঙ্গে কাজ করা যাবে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত