দুর্গাপুজো উপলক্ষে সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে, আগামী দিনেও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিলেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। শুক্রবার বিকেলে ঢাকার রমনা কালী মন্দিরে পুজোপ্রেমীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে এসে এই আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। সস্ত্রীক সেনাপ্রধানের সঙ্গে ছিলেন সে দেশের বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান।সাধারণত সেনা-নৌ-বিমান বাহিনীর প্রধানেরা দুর্গাপুজোয় মন্দির-মণ্ডপে আসেন না। কিন্তু এ বার বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভিন্ন। তারপরে আবার বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামের জেএম সেন হলের পুজোমণ্ডপে ইসলামি সঙ্গীত পরিবেশন ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়। জামায়াতে ইসলামিপন্থী সাংস্কৃতিক দল ‘চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির’ এক দল শিল্পী দূর্গোৎসবের মঞ্চে উঠে ইসলামি বিপ্লবের গান পরিবেশন করে রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছেন উদ্যোক্তাদের।
এই ঘটনায় রাতভর চলেছে ক্ষোভ-বিক্ষোভ। চট্টগ্রামের সিভিল ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সেনা-পুলিশের যৌথ টিম ঘন্টা পাঁচেকের মধ্যে সঙ্গীত পরিবেশনকারী দু’জনকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁরা সবাই পেশায় মাদ্রাসা শিক্ষক। ঢাকা-চট্টগ্রামের বাইরে আরও কয়েক জায়গায় ছোটোখাটো অশান্তির ঘটনাও ঘটেছে।
এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার ঢাকার অন্যতম পুরোনো ও ঐতিহ্যবাহী রমনা কালী মন্দিরের পুজো দেখতে সে দেশের শীর্ষ আধিকারিকদের নিয়ে গিয়েছিলেন সেনা প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। পুজোপ্রেমীদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পরে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘আপনারা উৎসবমুখর সুন্দর পরিবেশে পুজো উদযাপন করতে পারছেন দেখে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। শুধু ঢাকাতেই না, ঢাকার বাইরে সব জায়গায় আমাদের আধিকারিকরা মোতায়েন আছেন। আমরা আপনাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিচ্ছি। এতদিন খুব ভালো ভাবেই চলেছে, বাকি যে সময়টা আছে সেটাও সুন্দর ভাবে উদযাপন করতে পারবেন বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’
তাঁর সংযোজন, ‘সব ধর্মের মানুষের মাঝে সহমর্মিতা ও সহাবস্থান অতীতের মতো ভবিষ্যতেও বজায় থাকবে বলে আমরা আশাবাদী।’
ঐক্যের বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, ‘শতাব্দীর পর শতাব্দী আমরা একসঙ্গে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান বসবাস করে আসছি। এই যে আমাদের সহাবস্থান, যে সহমর্মিতা যেটা অতীতে সব সময়ে বজায় ছিল, ভবিষ্যতেও তা বজায় থাকবে।’
এই বছর সেনা-নৌ-বিমান বাহিনীর শীর্ষ কর্তারা পুজো মণ্ডপে এসেছেন কেন, সরাসরি তার উল্লেখ না করে তাঁর বক্তব্য, ‘আমরা সবাই আপনাদের পুজো-পার্বণে শরিক হব, আপনাদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেব। শতাব্দীর পর শতাব্দী আমরা এটাই করে আসছি, ভবিষ্যতেও তা জারি থাকবে।’