Homeদেশের গণমাধ্যমেস্ত্রীর লাশ মাটি চাপা দেন স্বামী, বাড়িওয়ালা ফেলেন নদীতে 

স্ত্রীর লাশ মাটি চাপা দেন স্বামী, বাড়িওয়ালা ফেলেন নদীতে 


গাজীপুরের শ্রীপুরে পাঁচ মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছেন সুমাইয়া (২৯) নামের এক পোশাক শ্রমিক। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারের পর এক আসামি জানান, হত্যার পর নিহতকে ভাড়া বাড়ির নিচে আরসিসি ঢালাই করে চাপা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সেই বাড়িতে অভিযান চালিয়েও লাশ উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে বাড়ির মালিককে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি পুলিশকে জানান, মরদেহ বস্তাবন্দী করে নদীতে ফেলে দিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল এ তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগে একই দিন সকালে নিখোঁজ নারী শ্রমিকের স্বামী মো. হানিফের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শ্রীপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বেড়াইদের চালা এলাকায় আব্দুল লতিফের নির্মাণাধীন ভবনে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তারা ওই ভবনের নিচতলার পেছনের অংশের আরসিসি ঢালাই ভাঙার কাজ শুরু করেন। তবে সেখান থেকে তারা মরদেহ উদ্ধার করতে পারেননি। এই বাড়িতেই স্বামীর সঙ্গে ভাড়া থাকতেন সুমাইয়া।

নিহত সুমাইয়া কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার আমিনগঞ্জ গ্রামের মো. সেলিম মিয়ার মেয়ে। তার মা-বাবা কেওয়া গ্রামের জনৈক গিয়াস উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। সেখানকার স্থানীয় আউটস্পেস নামে একটি কারখানায় চাকরি করতেন সুমাইয়া।

এ ঘটনায় স্বামী ও নির্মাণাধীন ভবনটির মালিকসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন- নিহতের স্বামী মো. হানিফ (৪০), তার বন্ধু জয়নাল আবেদীন (৩৮), আনিছ (৪৩) এবং ভবন মালিক আব্দুল লতিফ (৫০)।

গাজীপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কালিয়াকৈর সার্কেল) আফজাল হোসেন বলেন, গত ২৫ জুলাই পোশাক শ্রমিক সুমাইয়া গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর এলাকার এক আত্মীয়র বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। গত ২৭ ডিসেম্বর সুমাইয়ার মা তাসলিমা আক্তার বাদী হয়ে নিখোঁজের স্বামী মো. হানিফ ও তার বন্ধু জয়নাল আবেদীনকে অভিযুক্ত করে থানায় অপহরণের মামলা করেন।

পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব-১ পোড়াবাড়ি ক্যাম্প মামলার তদন্ত শুরু করে। তদন্তের একপর্যায়ে অভিযুক্ত জয়নাল আবেদীন এবং নিখোঁজ নারীর স্বামী মো. হানিফকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে র‍্যাব পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের সদস্যরা। গ্রেপ্তার জয়নাল আবেদীন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, সুমাইয়াকে হত্যার পর বেড়াইদেরচালা এলাকায় আব্দুল লতিফের নির্মাণাধীন তিন তলা ভবনের পেছনে একটি স্টোর রুমের নিচে চাপা দিয়ে ঢালাই করে রাখা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে র‍্যাব-১ ও পুলিশ ওই ভবনে যৌথ অভিযান চালায়। তারা ওই বাড়ির ছোট স্টোর রুমের মেঝে ভেঙে মরদেহ উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করে। প্রায় তিন ঘণ্টা অভিযান পরিচালনা করে লাশের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

র‍্যাব-১ পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর জুন্নুরাইন বিন আলম জানান, ‍আসামিদের তথ্যের ভিত্তিতে এই ভবনে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। ভবনের একটি স্টোর রুমে খনন করা হয়েছে। মরদেহের অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি। মরদেহটি এখান থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে এমন খবর পেয়েছে গ্রেপ্তারকৃতদের মাধ্যমে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, গ্রেপ্তারের পর বাড়ির মালিক আব্দুল লতিফ জানিয়েছেন, মাটিচাপা দেওয়া মরদেহটি বস্তাবন্দী অবস্থায় অটোরিকশা করে নিয়ে বরমী এলাকার বরামা ব্রিজে নিয়ে যান। সেখানে ব্রিজের ওপর থেকে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেওয়া হয় মরদেহ। 

তিনি আরো জানান, এরপর আব্দুল লতিফকে নিয়ে বরামা ব্রিজের যে অংশে মরদেহটি নদীতে ফেলা হয় ওই অংশ চিহ্নিত করা হয়েছে। বুধবার (১ জানুয়ারি) মরদেহ উদ্ধার কাজ পুনরায় পরিচালনা করা হবে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত