সম্পাদকীয় মতামতমুছে যাক গ্লানি ঘুচে যাক জরা, অগ্নি স্নানে শুচি হোক ধরা। পুরনো জরাজীর্ণতা দূর করে নতুন বছরের নতুন সূর্য আসে নতুন স্বপ্ন নতুন আশা নিয়ে। যদিও মনে করি বিগত বছরের দিনগুলো নতুন বছরে গিয়ে বদলাবে,কিন্তু আসলে সেটা বদলায় না। পুরাতন কাহিনী আমাদের পিছু ছাড়বেনা।
বিদায়ী ২০২৪ সালে আমাদের রাজনৈতিক,সামাজিক,অর্থনৈতিক,সাংস্কৃতিক জীবনের উপর নেমে এসেছিল দুর্বৃত্তের কালো থাবা। সেই ভয়াল কালো থাবার রেশ টানতে হবে আগামী কত বছর সেটা কেউ জানে না। আজন্ম স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি জুলাইয়ে মেটিকুলাস ডিজাইনে আন্দোলন করে জনপ্রতিনিধি দ্বারা নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়ে দেশে এক ভয়ঙ্কর অরাজকতার নজির স্থাপন করে চলছে প্রতিনিয়ত। যার ভুক্তভুগী বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ।
অবৈধ দখলদার বাহিনী অর্থাৎ যারা জনগনের ম্যান্ডেট নয় তারা গত পাঁচ মাসে অপকর্ম ছাড়া দেশ ও দশের জন্য ভাল কিছু করেছ এমন নজির বোধহয় এখনো কারো নজরে আসেনি। জাতীয়তাবোধে আঘাত করে এরকম অপকর্ম তারা প্রতিনিয়ত করে চলছে যেমন,মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলা, আওয়ামী লীগের যাকেই পাওয়া যায়, তাকেই মেরে ফেলা, অথবা গ্রেফতার করা, জেলে ভরা। হিন্দুদের বাড়িঘর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া , তাদের চাকরি থেকে পদত্যাগ করানো, চাকরি না দেওয়া। শিক্ষক এবং মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতোর মালা পরিয়ে হেনস্থা করা। বয়স্ক ভাতা বন্ধ করে দেওয়া। শিক্ষা ব্যাবস্থা ধ্বংস করে দেওয়া। ভারতবিদ্বেষ ছড়ানো। ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাওয়ার ষড়যন্ত্র। একাত্তরের শত্রু পাকিস্তানের সঙ্গে কোলাকুলি করা।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষা গ্রহনের পরিবর্তে ছাত্র ছাত্রীদের তৈরী করছে এক একটা ঘৃণাস্তম্ভ। তৈরী করছে দেশদ্রহী রাজাকার,আর এই রাজাকারদের নিয়ে দখলদার প্রশাসন এই বাংলার মাটিতে স্বর্গ সুখ ভোগ করার নেশায় উন্মত্ত।
সাধারণ জনগণের মৌলিক চাহিদার উপর তাদের কোন দৃষ্টিপাত নাই । যেখানে দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির কারণে সাধারণ জনগণ তাদের জীবন যাপনে নাজেহাল অবস্থা সেখানে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে তাদের নিছক ক্ষণিক বিনোদনের পিছনে।
বিদ্যমান ব্যবস্থায় জনগণের মুক্তি অসম্ভব।এ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ছাড়া জনগণের ভাগ্য বদল হবে না।
সমাজের সর্বত্র চলছে হীন প্রতিযোগিতা, কে কাকে ডিঙ্গিয়ে এগিয়ে যাবে, কে কাকে ধাক্কা দিলে নিজের অর্জন নিশ্চিত হবে সেটাই হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রধান উপকরণ।
জাতীয় জীবনে এই মানসিক বিপর্যয় জাতীয় সম্পদ বিনাশের যে কোন মাত্রার চেয়ে কম ক্ষতিকর নয়।
বর্তমানে আমরা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছি। ইতিহাসে ক্রান্তিকালের শেষ নাই। পুরাতন বছর পার হয়ে নতুন বছরে পদার্পণে রাজনৈতিক জমা খরচের অনেক কিছুর হিসেব মিলবে না। মানুষ সবসময় নতুন কালে পৌঁছাতে চায় পারা না পারা হয়ত বড় প্রশ্ন হয়ে থেকে যায়। সময়ের সিঁড়ি বেয়ে পিছনের জরাজীর্ণ পথ অতিক্রম করে মানুষ এগিয়ে যায় সামনের দিকে। সেই অগ্রগামী মানুষদের জন্য ২০২৫ সাল নিয়ে আসুক সুখ ও সমৃদ্ধি।
সকল অশুভ শক্তি দূর করে শুভ হোক ২০২৫ সাল।