আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে যারা প্রকাশ্যে গুলি করার হুমকি দিয়েছেন, ছাত্র-জনতাকে প্রতিহত করার, আন্দোলনকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন, তাদের অনেকেই গ্রেফতার হননি। আত্মগোপনে আছেন কিংবা হয়তো পালিয়ে গেছেন। যারা গ্রেফতার আছেন, তাদের তো বিচার করা কোনও সমস্যা না। যারা পালিয়ে গেছেন, তাদের বিচার করার বিধান এই আইনে আছে। ওনারা যদি দোষী সাব্যস্ত হন, আমাদের সঙ্গে যেসব দেশের এক্সট্রাডিশন ট্রিটি আছে, বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি আছে, কেউ যদি সেদেশে থাকে— তাহলে চুক্তি অনুযায়ী ফেরত আনার অনুরোধ করবো, ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। যাদের সঙ্গে চুক্তি নাই, তাদের ক্ষেত্রে ইন্টারন্যাশনাল কাস্টমারি ল অনুযায়ী যতটুকু পারা যায়, আমরা চেষ্টা করবো।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠনের বিষয়ে সচিবালয়ে নিজ দফতরে এক জরুরি ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘মাঝে মাঝে লোকজন একটু কনফিউজড হয়ে যায়। মাঝে মাঝে শুনি মানুষজন আমাকে বলে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুনি— ডিমের দাম বাড়লো কেন, তাও আসিফ নজরুলের দোষ। একজন ছাত্র চিকিৎসা পাচ্ছে না, আসিফ নজরুলের দোষ বা আইন মন্ত্রণালয়ের দোষ। পুলিশ গ্রেফতার করলো কেন সেটাও নাকি আইন মন্ত্রণালয়ের দোষ। পুলিশের গ্রেফতারের সঙ্গে আইন মন্ত্রণালয়ের কী সম্পর্ক?’
উপদেষ্টা বলেন, ‘মনে হয় আমাদের প্রতি প্রত্যাশা কিংবা আমাকে হয়তো আপনারা কেউ কেউ বেশি ভালোবাসেন। কিন্তু এটা তো আইন দ্বারা ডিফাইনড, অন্য মন্ত্রণালয়ের কাজ তো আমি করতে পারবো না। কোনও ধরনের এখতিয়ার আর আমার নেই।’ ‘তবে যখন উপদেষ্টামণ্ডলীর সভা হয় যখন ইস্যুগুলো আসে, তখন নিজেদের মতামত পরামর্শ উদ্বেগ এগুলো জানাতে পারি। কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়নের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের। ওনারা যথেষ্ট চেষ্টা করেন,’ বলেন আইন উপদেষ্টা।
আসিফ নজরুল জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ঘিরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের অনুমোদন দিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান করা হয়েছে গোলাম মোর্শেদ মজুমদারকে।
তিনি বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে হাইকোর্ট বিভাগের নবনিযুক্ত বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরও দুজন বিচারক ট্রাইব্যুনালে কাজ করবেন। তিন সদস্যের ওই কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন— হাইকোর্টের বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।’