ইস্পাহানির পৃষ্ঠপোষকতায় আবারও শুরু হতে যাচ্ছে ৩৬ তম জাতীয় টিম ব্রিজ চ্যাম্পিয়নশিপ। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মাইন্ড গেম হিসেবে সুপরিচিত এ খেলা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকার অলিম্পিক ভবনের ডাচ বাংলা অডিটোরিয়ামে গতকাল রোববার ‘মিট দ্যা প্রেস’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ দিনব্যাপী এ চ্যাম্পিয়নশিপের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে দেশের টিম ব্রিজের নতুন চ্যাম্পিয়ন দল। এবারের টুর্নামেন্টে সারা দেশের ১৬ থেকে ১৮টি দলের ১০৮ জন খেলোয়াড় অংশ নিচ্ছেন। প্রতিটি টিমে অংশ নিচ্ছেন ৪-৬ জন খেলোয়াড়। এ চ্যাম্পিয়নশিপের খেলাগুলো দুটি ভাগে অনুষ্ঠিত হবে ২৪ থেকে ২৬ ডিসেম্বর হবে ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের ইঞ্জিনিয়ার্স রিক্রিয়েশন সেন্টারে এবং ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বরের খেলাগুলো হবে ঢাকার ডি আই টি রোডস্থ অলিম্পিক ভবনে।
‘মিট দ্যা প্রেস’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্রিজ ফেডারেশনের সভাপতি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, সহসভাপতি সাঈদ আহমেদ রবি ও মো. আবুল কাশেম, সাধারণ সম্পাদক নাঈমুল হাসান, আহ্বায়ক মাওলা আল মামুন, ইস্পাহানি টি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক ওমর হান্নান। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্রিজ ফেডারেশন ও ইস্পাহানি গ্রুপের বিভিন্ন কর্মকর্তা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্যে সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ব্রিজ খেলাকে জনপ্রিয় করার জন্য আমরা জাতীয় ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করব। ভবিষ্যতে টুর্নামেন্টের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন। দলগুলো উন্নত করার জন্য একটি জাতীয় কোচ নিয়োগ করার কথা ব্যক্ত করেন। শেষে যুবসমাজের মধ্যে খেলা জনপ্রিয় করার জন্য কিছু সেমিনার আয়োজন করার কথা বলেন তিনি। এ ছাড়া এইবার প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন দলকে ১ লাখ টাকা পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর ইস্পাহানির পক্ষ থেকে ওমর হান্নান তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, ইস্পাহানি সব সময়ই খেলাধুলার উন্নয়নে অবদান রাখার চেষ্টা করে। তাই আবারও এ চ্যাম্পিয়নশিপের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত হতে পেরে ইস্পাহানি গ্রুপের পক্ষ থেকে আয়োজকদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্রিজ অন্যতম জনপ্রিয় মাইন্ড গেমস হিসেবে সুপরিচিত। বিশ্ব ক্রীড়ায় অন্যতম মাইন্ড গেমস হিসেবে ব্রিজের সূচনা অতি প্রাচীন হলেও, সত্তর দশকের শেষ দিকে বাংলাদেশে ব্রিজ খেলার যাত্রা শুরু হয়। সম্ভাবনাময় এ খেলাটি বিভিন্ন সামাজিক ট্যাবু এবং যথাযথ প্রচারণার অভাবে এ দেশে তেমন প্রসার লাভ করেনি। সীমিত সুযোগ-সুবিধার মধ্যেও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের সাফল্য ঈর্ষণীয়। ক্রিকেটের পরে বাংলাদেশ দুই বার (ফ্রান্স-২০১৭ এবং চীন-২০১৯) বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৯ সালে দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সমন্বয়ে গঠিত জোনাল (ব্রিজ ফেডারেশন অব এশিয়া অ্যান্ড অ্যান্ড মিডল ইস্ট-বিএফএএমই) নামে খ্যাত চ্যাম্পিয়নশিপে (জর্ডানে অনুষ্ঠিত) চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব লাভ করে।
ব্রিজ খেলায় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব বয়সী খেলোয়াড়ের অংশগ্রহণের দ্বার উন্মুক্ত। কায়িক শ্রমের তেমন আবশ্যকতা না থাকায়, একজন ১৫ বছরের কিশোর থেকে শুরু করে ৯০ বছরের বৃদ্ধেরও এ খেলায় অংশগ্রহণের সমান সুযোগ রয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, এশিয়ার পরাশক্তি চীনসহ উন্নত বিশ্বে ব্রিজ একটি পেশাদার খেলা হিসেবে ইতিমধ্যে প্রসার লাভ করেছে।
বাংলাদেশে ব্রিজ খেলার জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্য ইস্পাহানি সব সময়ই সচেষ্ট। ইতিপূর্বেও ইস্পাহানি ব্রিজ ফেডারেশনের বিভিন্ন টুর্নামেন্টের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। এ ছাড়া ক্রিকেট, ফুটবল, বাস্কেটবল, দাবা, স্কোয়াশ, গলফসহ বিভিন্ন খেলায়ও ইস্পাহানি সব সময়ই পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকে।