Homeরাজনীতিএকাত্তর সালে যুদ্ধ করা কি অন্যায় ছিল, প্রশ্ন মির্জা আব্বাসের

একাত্তর সালে যুদ্ধ করা কি অন্যায় ছিল, প্রশ্ন মির্জা আব্বাসের


বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য  মির্জা আব্বাস বলেছেন, আমার প্রশ্ন যে, একাত্তর সালে জাতি কি করলো? আমরা কি অন্যায় করেছিলাম? আমি জানি, একটা পক্ষ বলবে যে, হ্যাঁ ওইদিন পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন করে অন্যায় করেছেন… বলতে পারেন। কিন্তু আমরা কি যুদ্ধ করে অন্যায় করেছিলাম, দেশকে স্বাধীন করে কি অন্যায় করেছিলাম?

রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই প্রশ্ন তুলেন। নয়া পল্টনে আনন্দ ভবনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে সাংবাদিকদের সঙ্গে এই মতবিনিময় অনুষ্ঠান হয়।

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ওরা বাকশাল কায়েম করলো। হাসিনা দেশটাকে ১৫ বছরে শেষ করে দিলো… আমি কালকেও বলেছি, প্রায় ভারতের আন্ডারে উপনীত করেছিল… এখান থেকে উদ্ধারে আমরা ১৫ বছর আন্দোলন করেছি। আমাদের আন্দোলনের কি কোনেও মূল্য নাই।’

তিনি বলেন, ‘এককভাবে কোনও মতামত না নিয়ে, সিনিয়রদের সঙ্গে কথা না বলে এভাবে ওদের (ছাত্র বৈষ্যম আন্দোলনকারী) একথা বলা কি ঠিক হলো। আমি ’৭২ সালের সংবিধানের সমর্থক নই, আমি একাত্তর সালের সংবিধানের মুক্তিযুদ্ধের রক্তের সমর্থক। মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল বলেই এই সংবিধান… যদি মুক্তিযুদ্ধটা একাত্তরের আগেই অর্থাৎ একাত্তরের প্রথম দিকে শেষ হয়ে যেতো তাহলে ৭১ সালের সংবিধান বলা হতো।’

আগামী ৩১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আওয়ামী লীগকে অপ্রাসঙ্গিক ঘোষণা ও মুজিববাদী ৭২ সালের সংবিধানকে কবর দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি ঘোষণা দেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি এবং ফ্রন্ট লাইনে অংশ গ্রহণ করেছি সামনা-সামনি… আমার সামনে বহু সহকর্মী মারা গেছেন, আমার বন্ধুবান্ধব… মোট মারা গেছে প্রায় তিন লাখ। শহীদের রক্তের ওপর দিয়ে লেখা যে সংবিধান, সেই সংবিধানকে যখন কবর দেওয়ার কথা বলা হয়, তখন কিন্তু আমাদের কষ্ট লাগে। আমরা তোমাদের সিনিয়র হিসেবে, তোমাদের অগ্রজ হিসেবে আমরা কষ্ট পাই যে, এটা কি করছে? এভাবে কথা বলাটা ঠিক হলো? এই সংবিধানে যদি খারাপ কিছু থাকে নিশ্চয়ই সেটা বাতিলযোগ্য।’

‘যদি নতুন কোনও সংবিধান লিখতে হয়… তাও তো লিখতে হবে আগের ওমুক সালের সংবিধান বাতিল করে এই সংবিধান জারি করা হলো… সুতরাং, এই সংবিধানকে সংশোধন করা যাবে। আমি আগে একবার বলেছিলাম, একজন খুব আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে গেছেন, যিনি আমার এক ছোট ভাই, আমার খুব প্রিয়… বাইরে থেকে দেশকে পরিচালনা করার চেষ্টা করছেন, ছাত্রদের পরিচালনা করার চেষ্টা করছেন, উনি খুব ক্ষিপ্ত হয়ে গিয়েছিলেন… আমি বলেছিলাম যে, সংবিধান একটা রাফ খাতা নয় যে, ছুড়ে ফেলে দিলাম।’

 

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমি বলবো, আমাদের সন্তানদের কাছে যারা এই ঘোষণা দিয়েছে (সংবিধানের কবর দেওয়া হবে) বৈষ্যমবিরোধী ছাত্রদের কাছে অনুরোধ জানাবো, কথাগুলো বুঝার চেষ্টা করবেন, ভুল বুঝবেন না… সেটা হলো এই, এধরনের কথাগুলো ফ্যাসিবাদের মুখ দিয়ে আসে… কবর দিয়ে দেবো, মেরে ফেলবো, কেটে ফেলবো, ছিঁড়ে ফেলবো… এই সব কথা ভালো কথা নয়।’

‘জাতি তাকিয়ে আছে আপনাদের দিকে, আমরাও তাকিয়ে আছি তোমাদের দিকে… তোমাদের মুখ থেকে এই ধরনের কথা আমরা আশা করি না।’

যথাসময়ে নির্বাচনের দাবির কথা পুনরুল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই, সংস্কারের কথা বলছেন… করেন, যতটুকু লাগে করেন.. আমাদের কোনও আপত্তি নাই। কিন্তু যথাসময়ে দেশের মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী নির্বাচন দেবেন।’

তিনি বলেন, ‘২০২৪ সালের আন্দোলনকে কেউ ব্র্যান্ডিং করার চেষ্টা করবেন না। কেউ জাতিকে অহংকারী বক্তব্যের মাধ্যমে… অহংকার আল্লাহতা’লা পছন্দ করেন না। যিনি আজকে বক্তব্য দিয়েছেন আমি তাকে অনুরোধ জানাবো, টেলিভিশনে ক্যামেরায় দেখেন কী বলেছেন। অহংকার আল্লাহতালা পছন্দ করে না। হাসিনা অহংকার করেছিল পতন হয়ে গেছে। হাসিনা পতন আমাদের কষ্টের অর্জন, এটাকে এরকম বালখিল্য কথা বলে জাতিকে বিভক্ত করবেন না… এটা আমরা সর্বশেষ অনুরোধ।’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘একটা কথা মাথায় রাখতে হবে, আমাদের দেশের পাশে ভালো প্রতিবেশী নাই। আমাদের পাশে যারা আছে, তারা কখনও বাংলাদেশকে স্থির থাকতে দিতে চায় না। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আমরা সুযোগ দিতে চাই না, সুযোগ দেবো না। আজকে বাংলাদেশ নিয়ে কত কথা বলছে, কেউ চট্টগ্রাম নিয়ে যায়, কেউ লারমনিরহাট নিয়ে যায়, কেউ অস্ত্র নিয়ে যায়… বাবা হরিলুটের মাল বাংলাদেশ। না এখন সম্ভব না।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, নির্বাহী কমিটি সদস্য কাজী আবুল বাশার, মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক, সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত ফটোগ্রাফার নুরুদ্দিন আহমেদ, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি বাছির জামাল, সাংবাদিক কামরুজ্জামান রাজিব, মহসিন হোসেন, নাজিয়া আফরিন, আহমেদ সালেহীন, রেজা করীম, বাবুল তালুকদার, মো. মহসিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত