Homeদেশের গণমাধ্যমেবিয়ের মানসিক ও পারিবারিক প্রস্তুতি যেভাবে নেবেন

বিয়ের মানসিক ও পারিবারিক প্রস্তুতি যেভাবে নেবেন


বিয়ে এমন একটি সম্পর্ক যা দুইজন আলাদা মানুষকে একটি বন্ধনে আবদ্ধ করে। ভিন্ন পরিবারে, পরিবেশে, চিন্তা, চেতনায় বড় হওয়া দুইজন মানুষ যখন বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হতে চান তাদের উচিত দুইজন দুইজনকে ভালোভাবে জেনে নেওয়া। এই জানাশোনাকে মনোবিদরা দুই ভাগে ভাগ করছেন, অতি প্রয়োজন আর অল্প প্রয়োজন।

মনোবিদরা বলছেন, বর্তমান পাত্র পাত্রীরা অল্প প্রয়োজনীয় বিষয় জানতে বেশি আগ্রহী। যেমন— এক সঙ্গে কফি পান করতে ভালো লাগছে কিনা অথবা পাশাপাশি হাঁটলে কেমন দেখাচ্ছে। তারা বলছেন এগুলো জানা, বোঝা ভালো কিন্তু আরও বেশি জানা প্রয়োজন একজন আরেকজনের জীবনদর্শন। অনেক সময় পাত্র-পাত্রীর দেখা হওয়া, কথা বলার আগেই দুই পরিবার বিয়ের কথা অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যায়, এই পরিস্থিতি পাত্র পাত্রীর ওপর বাড়তি চাপ ফেলে বলে মনে করেন মনোবিদরা। তাহলে বিয়ের আগে দুইজনের জানাশোনা এবং মানসিক প্রস্তুতি কেমন হওয়া জরুরি চলুন জানা যাক।

ইয়াহিয়া আমিন, সাইকোলজিস্ট লাইফ স্প্রিং বলেন, ‘‘বিয়ে করার আগে মানসিক প্রস্তুতি রাখতে হবে। আপনাকে মনে রাখতে হবে, ‘ম্যারেজ ইজ নট অল অ্যাবাউট হানিমুন’। আমরা যখন চাকরি শুরু করি তখন কি আমরা মনে করি, আমাকে প্রথমেই বেতন দেবে? না । আমরা এমনটা ভাবতে পারি না। আমরা জানি, প্রথমে শ্রম দেবো, কষ্ট করবো, নিয়মিত অফিসে যাবো, কাজের প্রতি দায়িত্বশীল থাকবো; এরপরে বেতন পাবো। এরপর ৩০, ৩৫ বছরের ক্যারিয়ার আমাদের লাইফকে মিনিংফুল করবে। একই ভাবে বিয়ের সম্পর্কটাও এমন। প্রথমত এটি একটি দায়িত্ব। বিয়ে মানে আপনি আপনার নিজের দায়িত্ব নিচ্ছেন এবং অন্য আরেকটি মানুষের দায়িত্ব নিচ্ছেন। এই সম্পর্কে আমরা প্রথমেই যদি মনে করি, সে আমাকে কী দিতে পারবে—তাহলে সংসারে অশান্তি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।’’

‘‘ আপনি যাকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন তার সঙ্গে অতি প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলে নেন। যেমন— পরিবার পরিকল্পনা, অর্থ ব্যবস্থাপনা, ক্যারিয়ার পরিকল্পনা ইত্যাদি। অনেক সময় বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রী যখন দেখা করে তারা ভাবতে থাকে, তার সঙ্গে আমার কফি খেতে কেমন লাগে, ঘুরতে যেতে কেমন লাগে, তার সঙ্গে আমার ছবি তুললে কেমন লাগবে।—এই জিনিসগুলো জানা বা বোঝা ভালো। কিন্তু এগুলো না জানলেও আপনি সংসারে সুখি হতে পারবেন। মূলত আপনার জানা ও বোঝা জরুরি যে তার সঙ্গে বোঝাপড়া, দর্শন কতটুকু মেলে।’’— যোগ করেন ইয়াহিয়া।

 

এই মনোবিদ আরও বলেন, ‘‘অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ হচ্ছে নাকি লাভ ম্যারেজ হচ্ছে— এটা বড় বিষয় নয়। আগে পরিবার কথা বলবে না, আগে পাত্র এবং পাত্রী কথা বলার পরে ফ্যামিলি কনভার্সেন হওয়া উচিত। অনেক সময় পরিবারের পক্ষ থেকে যদি আগে কথা বলা হয় এবং তারা যদি অনেক ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলে তাহলে সেই সম্পর্ক পাত্র-পাত্রীর জন্য চাপ সৃষ্টি করে। যেটার কোনো অর্থ নাই। কারণ দিনশেষে সংসার করবে পাত্র এবং পাত্রী। তারা একবার বা একাধিকবার কথা বলে যদি মনে করে সংসার করতে পারবে তাহলে পরিবার উদ্যোগী হওয়া উচিত।’’

উল্লেখ্য,  বিয়ের পরে জীবনে অনেক পরিবর্তন আসবেই। সেটা পাঁচ শতাংশ হোক কিংবা পঞ্চাশ শতাংশ হোক। বিশ্বাস করতে হবে বিয়ে জীবনের সব সমস্যার সমাধান করে দিতে পারবে না। নিজের ট্রমা, অ্যাডিকশন জাতীয় কিছু যদি থাকে তাহলে প্রথমত নিজের প্রচেষ্টায় বের হয়ে আসার চেষ্টা করতে হবে। নিজের জীবনে কেমন মানুষ প্রয়োজন সেই সিদ্ধান্তে আসার আগে নিজেকে চিনতে হবে। নিজের জীবনবোধ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত