পাকিস্তানের সামরিক আদালত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেফতারের পর সামরিক স্থাপনায় হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৬০ জন বেসামরিক ব্যক্তিকে ২ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দেশটির সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা এ তথ্য জানিয়েছে।
সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে খানের এক আত্মীয় এবং দুজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা রয়েছেন। এর কয়েকদিন আগে একই অভিযোগে আরও ২৫ জনকে দণ্ড দেওয়া হয়।
২০২৩ সালের মে মাসে ইমরান খানের গ্রেফতারের পর পাকিস্তানজুড়ে সহিংস প্রতিবাদ শুরু হয়। তার সমর্থকরা দেশটির প্রভাবশালী সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে নজিরবিহীন আক্রমণ চালায় এবং সামরিক স্থাপনাগুলোতে ভাঙচুর করে।
সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতি, সরকার ও সশস্ত্র বাহিনী ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য শাসন বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এই দণ্ডাদেশগুলো ইমরান খানের সমর্থকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। তাদের শঙ্কা সামরিক আদালতগুলো খানের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনায় বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
আন্তর্জাতিক মহলও এই দণ্ডাদেশের সমালোচনা করেছে। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা এই সাজাপ্রাপ্তদের বিষয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দফতর বলেছে, সামরিক আদালতে বেসামরিক ব্যক্তিদের বিচার স্বচ্ছতার অভাব, স্বাধীন পর্যালোচনা এবং ন্যায়বিচারের অধিকার ক্ষুণ্ন করে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ বিষয়ে আরও কড়া সমালোচনা করে জানিয়েছে, এই সাজাগুলো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তির অধীনে পাকিস্তানের গ্রহণ করা দায়বদ্ধতার সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী জানান, সামরিক আদালতের রায়গুলো ন্যায়বিচারের অধিকার লঙ্ঘন করে না। দণ্ডপ্রাপ্তরা আইনজীবী নিয়োগ, পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ এবং সামরিক আদালত ও বেসামরিক উচ্চ আদালতে দুবার আপিল করার সুযোগ পান।
ইমরান খানের সমর্থকেরা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। খান নিজে দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে আনা মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
সামরিক বাহিনী এবং সরকার উভয়ই খানের প্রতি কোনও ধরনের অবিচার করা হয়নি বলে দাবি করেছে।
সূত্র: রয়টার্স