মুরগির উৎপাদন বন্ধের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। আগামী ২ মাসের মধ্যে দাবি পূরণের আশ্বাসে মুরগির ডিম ও মুরগি উৎপাদন বন্ধের কর্মসূচি থেকে সরে এসেছে প্রান্তিক খামারিদের এই সংগঠনটি। আজ বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রান্তিক খামারিদের এই সংগঠনটি।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইল সংগঠনটির সভাপতি সুমন হাওলাদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারের হস্তক্ষেপে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, সংশ্লিষ্ট সব ব্যক্তিদের নিয়ে বিপিএর সঙ্গে ১০ দফা দাবি নিয়ে আলোচনায় বসেছেন। আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে প্রান্তিক খামারি এবং দেশ ও জনগণের স্বার্থে বিপি এর প্রান্তিক পোলট্রি খাতের ১০ দফা দাবি পূরণ করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবেন। তাই কর্মসূচি প্রত্যাহার করছি।’
সভাপতি বলেন বৈঠকে সরকার পক্ষ থেকে বিপিএ সংগঠনকে এ খাতের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যুক্ত করা হবে বলে জানানো হয়। বিপিএ দেশের পোলট্রি শিল্পের টেকসই উন্নয়ন, খামারিদের সুরক্ষা এবং ভোক্তাদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে পোলট্রি পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে উপস্থাপিত ১০ দফা দাবির পূরণের জন্য আনুষ্ঠানিক আশ্বাস পেয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সরকার পোলট্রি সেক্টরের দাবিগুলো গুরুত্ব সহকারে যাচাই-বাছাই করে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে, আমরা পয়লা জানুয়ারি থেকে ডিম ও মুরগি উৎপাদন বন্ধ রাখার ঘোষণা থেকে আপাতত সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে, আমরা সরকারকে দুই মাসের সময় দিয়েছি। এই সময়সীমার মধ্যে দাবিগুলো বাস্তবায়িত না হলে, প্রান্তিক খামারিদের স্বার্থ রক্ষার জন্য আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে। সরকারের প্রতিশ্রুতি আমাদের আস্থা দিয়েছে। তবে আমরা প্রস্তুত রয়েছি, যদি প্রয়োজন হয় কঠোর কর্মসূচি গ্রহণের। আপনারা ধৈর্য ধরুন, আমরা আপনাদের পাশে আছি।’
সরকারে কাছে বিপিএর দশ দফা দাবি হলো—পোলট্রি ফিড ও বাচ্চার মূল্য নিয়ন্ত্রণ, কৃত্রিম সংকট ও অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা রোধে কঠোর পদক্ষেপ, ভর্তুকি ও প্রণোদনা দেওয়া।
খামারিদের উৎপাদন খরচ কমাতে বিশেষ ভর্তুকি ব্যবস্থা, কর ও শুল্ক কমানো, পোলট্রি পণ্য এবং ফিড কাঁচামালের ওপর অযৌক্তিক কর প্রত্যাহার, সহজ ব্যাংক ঋণ দেওয়া, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামারিদের জন্য সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা, একদিন বয়সী বাচ্চার স্বচ্ছ বাজার, কৃত্রিম সংকট রোধে বাজারে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা, পোলট্রি রপ্তানি, আন্তর্জাতিক মানের প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র স্থাপন করে রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি, প্রযুক্তির ব্যবহার, আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণের প্রসার, ক্ষুদ্র খামারিদের সুরক্ষা, বিশেষ সুরক্ষা নীতি এবং প্রণোদনা প্যাকেজ, পোলট্রি স্বাস্থ্য, মানসম্পন্ন ওষুধ এবং টিকা সরবরাহ নিশ্চিত করতে রোডম্যাপ প্রণয়ন। পোলট্রি বোর্ড গঠন এবং দীর্ঘমেয়াদি নীতি নির্ধারণের জন্য একটি স্বতন্ত্র পোলট্রি বোর্ড গঠন করা।